মুক্তচিন্তা রিপোর্ট : জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন নিউইয়র্ক ( জেবিবিএ)’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক গত ৯ জানুয়ারি নির্বাচনে ঘোষিত প্যানেলকেই বিজয়ী কমিটি হিসেবে ঘোষণা করেছেন। জেবিবিএ’র নির্বাচনের একমাস পরে গত ১১ ফেব্রæয়ারি সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটস’র নবান্ন পার্টি হলে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি আবারও বিজয়ী প্যানেলের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে নানা অভিযোগ তুলে বলেন, ‘নির্বাচনে ক্রিমিনাল এ্যাক্টিভিটি, দূর্নীতি ও ব্যাপক অনিয়মের জন্য নির্বাচনের ফলাফল কোনো অবস্থাতেই মেনে নেয়া যায় না বিধায় আমরা আদালতের শরনাপন্ন হয়েছি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নবানে জর্জরিত স্বঘোষিত জেবিবিএ’র প্রেসিডেন্ট মাহাবুবুর রহমান টুকু লিখিত বক্তব্যে বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সমর্থনে যে কোনো উপায়েই গিয়াস-তারেক প্যানেল অবৈধ তৎপরতায় আশ্রয় নিয়েছিলো। নির্বাচনের পরের দিনই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বাংলাদেশ সফরকেও তিনি এই তৎপরতার অংশ বলে অভিযোগ করেন। তার মতে ‘নির্বাচনে ব্যবহৃত ইভিএম মেশিন ও সফটওয়্যার ম্যানিপুলেশন, প্রকৃত ভোটারদের ভোট প্রদানে বাঁধা এবং নন ভোটারদের ভোটদানে সুযোগসহ বিভিন্ন অপতৎপরতা চালানো হয়েছিলো। এই অপতৎপরতাকে বৈধ করার লক্ষে এনওয়াইপিডি’র অফিসারদেরকেও ব্যবহার করা হয়েছিলো।’
এনওয়াইপিডি’র অফিসারদের কিভাবে ব্যবহার করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গিয়াস-তারেক প্যানেলের একজনের ফোন কল পেয়ে এনওয়াইপিডির অফিসার ভোটকেন্দ্রে আসার কারণে ভয়ের সৃষ্টি হয়েছিলো। সেটাকেই তিনি এনওয়াইপিডির সংশ্লিষ্টতা বলেন। এভাবেই এনওয়াইপিডি’কে ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মামলা করার পরেও সেটার রায় হওয়ার আগেই কমিটি কেনো ঘোষণা করলেন। এই কমিটি ঘোষণার বৈধতা কি ? এমন প্রশ্নের জবাবে টুকু বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম মামলা হলে সবাই চুপ হয়ে যায়। বিগত দিনেও এমন হয়েছে। তবুও আমরা মনে করি আমাদেরটাই বৈধ কমিটি। তারা যেহেতু অভিষেক করতে যাচ্ছে। আমরা মনে করি আমরাই নির্বাচিত।’
আপনি বলছেন নির্বাচন বৈধ হয়নি। তাহলে নির্বাচনের আগের কমিটি বহাল থাকতে পারে। অথবা নির্বাচিত কমিটি কাজ করবে । কিন্তু আপনি কি করে নতুন কমিটি ঘোষণা করছেন ? এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা মনে করি আমাদের এই কমিটিই প্রকৃত কমিটি। আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ততো জ্যাকসন হাইটসবাসী এতিম থাকবে না। তাই টুকু-মুনির প্যানেলই নির্বাচিত কমিটি হিসেবে কাজ করবে।
কমিটি ঘোষণা আদালত অবমাননার সামিল হতে পারে কিনা ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আদালতের রায়ের অপেক্ষায় থাকবো। কিন্তু তারা আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা করেনি। বিধায় আমরা কমিটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছি।’
আদালত নির্বাচিত কমিটির উপর কোনো স্থিতাবস্থা ঘোষণা করেছে কিনা ? এই প্রশ্নের জবাবে টুকু বলেন, ‘আদালতে আমরা যে অভিযোগ দিয়েছি তার উপরে তদন্ত করে দেখছে। একইসাথে গিয়াস-তারেক কমিটিকে ৩০ দিনের মধ্যে উত্তর দিতে বলেছে।’
মামলা দায়েরের পরপরই আদালত আপনাদের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে। সুতরাং এটা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের অর্থ কি ? এমন প্রশ্নের জবাবে টুকু বলেন, ‘আপনি কোন মামলার বিষয়ে বলছেন আমার জানা নেই।’
মামলা হবার পরে প্রায় একমাস পার হয়ে গেলেও মামলা সংক্রান্ত কোনো নথি তারা সংবাদ সম্মেলনে নিয়ে আসেননি বা সাংবাদিকদের এ বিষয়ে সঠিক কোনো তথ্যও দিতে পারেননি।
সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মুনির হাসান উপস্থিত থাকলেও তিনি কোনো কথা বলেননি। অন্যদের মধ্যে সোলায়মান আলী, আল ফারুক উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচনে টুকু-মুনির ঘোষিত প্রার্থীদের অধিকাংশই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না।