Home কমিউনিটি নিউইয়র্কে অধ্যাপক ড. আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরীর লেখা বই নিয়ে আলোচনা সভা

নিউইয়র্কে অধ্যাপক ড. আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরীর লেখা বই নিয়ে আলোচনা সভা

 ‘প্রতিকুলতার মধ্যেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে’

Mukto Chinta
০ comment ১৪৬ views

মুক্তচিন্তা রিপোর্ট : অনেক প্রতিকূলতা থাকার পরেও আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রতিবেশি অনেক দেশকে ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশকে রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ হানাহানির দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে অনেকে যেভাবে চিত্রায়িত করতে চায় সেটা বাংলাদেশের প্রকৃত চিত্র নয়। বাংলাদেশে উন্নত স্বাস্থ্য সেবার কারণে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। বিশেষ করে নারীদের ব্যাপারটা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। প্রান্তিক মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বেড়েছে। দারিদ্রের হারও অনেক কমেছে। এরকম অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যাবে। এটি সম্ভব হয়েছে দেশের জনগণ, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যৌথ প্রচেষ্টায়। দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করেছে ব্র্যাকসহ বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠনগুলো (এনজিও)। ১৮ নভেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্টুরেন্টের হলরুমে লেখকের উপস্থিতিতে গ্রন্থের আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। নিউইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির পাবলিক হেলথ্ বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী তাঁর নিজের লেখা একজন উন্নয়ন কর্মীর বেড়ে ওঠা “আমার ব্র্যাক-জীবন” শীর্ষক গ্রন্থের আলোচনায় স্বাগত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় নিউ ইয়র্কের পাঠকপ্রিয় সাপ্তাহিক ‘প্রথমআলো উত্তর আমেরিকা’র আয়োজনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফার্মাসিস্ট লিয়াকত হোসেন।
আলোচনা সভায় সাংবাদিক, লেখক, শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবিসহ কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের নেতা, সাংস্কৃতিজনসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। নিউইয়র্ক ছাড়াও বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত অতিথিরা অংশ নেন আলোচনা পর্বে। সবাইকে স্বাগত জানান প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা’র সম্পাদক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন।


বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এনজিও ব্র্যাকের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান, পরিসংখ্যানবিদ-গবেষক ডা. রাজা বলেন, ব্র্যাক বাংলাদেশের স্বাধীনতার একটি ফসল। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে দেশ গঠনে তথা দারিদ্র দূরীকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক মুক্তি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যখাতের অগ্রগতিতে তথা প্রান্তিক মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ শুরু করে ব্র্যাক। আজ ব্র্যাক বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ১১টি দেশে কাজ করছে। ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের সান্নিধ্যে সুদীর্ঘ ৪২ বছর ব্র্যাকে কাজ করার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া। তিনি তার সুদীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা, অর্জন, গবেষণা, প্রাপ্তিসহ নানান দিক তুলে ধরার চেষ্টার কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি আমার সাধ্যমতো সবকিছু তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আমার এই বইয়ে।
কথা বলার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে বর্হিবিশ্বের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের নেতিবাচক প্রচার পায়। তখন আমরা এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোর রাজধানীতে গিয়ে বাংলাদেশের সেই এগিয়ে যাওয়ার চিত্র তুলে ধরি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেই অগ্রগতির বিষয়টি। যারাই সেই অগ্রগতির কথা শুনেছে বিস্মিত হয়েছে, পুলকিত হয়েছে।


আলোচনা অনুষ্ঠানে বারবার উঠে আসে ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের প্রসঙ্গ। বক্তারা সবাই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করেন তাকে। একইসাথে আলোচনা ও মুক্ত প্রশ্নপর্বে সমালোচনা উঠে আসে এনিজওদের কর্মকান্ড নিয়ে। কেউ কেউ ক্ষোভের সাথে বলেন এনজিওরা ডোনার এবং সরকারের বিরুদ্ধে উচ্চকিত হন না কখনো, দালালী করেন।
ডা. রাজা এসব অভিযোগের উত্তর দিতে গিয়ে বলেন, ব্র্যাকের উদ্ভাবন বাংলাদেশের গ্রামে গ্রামে ছড়িয়েছে। ব্র্যাক বাংলাদেশের মানুষকে জাগানোর কাজ করেছে। ডায়রিয়া প্রতিরোধে মুখে খাবার স্যালাইনের ব্যবহার, জনস্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলোর সুফল পাচ্ছে বাংলাদেশ। ব্র্যাক বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে দালালী করেছে এবং দালালীটা দরিদ্র মানুষের পক্ষে করেছে। সাধারণ মানুষের জীবন মান উন্নয়নের পক্ষে করেছে।
অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন- কবির কিরন, বেনজির শিকদার এবং গান পরিবেশন করেন জাকির হোসেন। আলোচনা পর্বে অংশ নেন হাসান ফেরদৌস, শেখ আখতারুল ইসলাম, রহমান মাহবুব, সেকিল চৌধুরী, ডা. এহসান হক, এইচ বি রিতা, রওশন হক, শাহীন দিলওয়ার, মনিজা রহমান, রোকেয়া দিপা, আখতারুল আলম, ওয়াজেদ আহেম্মদ, নাসির শিকদার, ইসমত হানিফা, সুমাইয়া চৌধুরী, রাজীয়া নাজমী, আনিসুল কবির, আব্দুল কাইয়ুম, ফয়সাল ইয়াকুব, সামছুল ইসলাম, জাকির হোসেন, শাহজাদা চৌধুরী, সৈয়দ ফজলুর রহমান, রাণা ফেরদৌস, মনজুরুল হক, আব্দুল কাইয়ুম পারভেজ প্রমুখ।


সভাপতির বক্তৃতায় এডভান্স ফার্মাসিউটিক্যালসের ভাইস প্রেসিডেন্ট, রিভিভিফাই নামের বিস্ময়কর সাপ্লিমেন্টের আবিষ্কারক, বিজ্ঞানী লিয়াকত হোসেন বলেন, জীবনের এ সময়ে নিজের জন্য তাঁর কিছুই চাওয়ার নেই। প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে তিনি আনন্দিত। তাঁর সমস্ত প্রয়াস এখন মানুষের কল্যাণে উৎসর্গ করা বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক ডা: জিয়াউদ্দীন আহমেদ নিউইয়র্কের বাইরে থেকে এসেও যারা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন, তাদের সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ড.মোশতাক রাজা চৌধুরীর মতো ব্যক্তির কাছ থেকে দেশ ও সমাজ অনেক পেয়েছে। তাঁদের কর্মপ্রয়াস নিয়ে নতুন প্রজন্ম চর্চা করার মধ্য দিয়ে লাভবান হবে বলে তিনি আশা করেন।
প্রচন্ড ঠান্ডা উপক্ষো করে অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রথম আলেঅ উত্তর আমেরিকার সম্পাদক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন। তিনি বলেন, প্রথম আলো সব সময়ই সত্যের পক্ষে, সুন্দরের পক্ষে।

You may also like

Leave a Comment

Muktochinta

Multochinta is a famous news media from New York. 

Subscribe my Newsletter for new blog posts, tips & new photos. Let's stay updated!

All Right Reserved. 2022 emuktochinta.com