ঢাকা অফিস : বাংলাদেশে বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ দিন দিন কমেই যাচ্ছে। মাত্র দুই বছর আগে ২০২১ সালের আগষ্টে রিঝার্ভ ছিলো ৪৮ বিলিয়ন ডলার। আর দুই বছরের ব্যবধানে সেই রিঝার্ভের পরিমান এখন মাত্র ২১ বিলিয়ন ডলার। যদিও সেটা আন্তর্জাতিক হিসেবে ১৭ বিলিয়নের নিচে।
এদিকে মাত্র গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ছয় কোটি মার্কিন ডলার। এতে করে রিজার্ভ কমে ২ হাজার ৮৯ কোটি ৭০ লাখ ডলারে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে রিজার্ভের এই চিত্র উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুসারে গত আগস্ট মাসের শুরুতে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৩৩০ কোটি ডলার। চলতি মাসের শুরুতে তা কমে ২ হাজার ১০৫ কোটি ডলারে নামে। এর মানে দুই মাসে রিজার্ভ কমেছে ২২৫ কোটি ডলার। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১০০ কোটি ডলারের নিচে নেমে আসে।
২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি বা ৪৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি। গত বছরের ২৫ অক্টোবর সেই রিজার্ভ কমে হয় ৩ হাজার ৫৮০ কোটি ডলার। গত বুধবার রিজার্ভ ২ হাজার ৬৭০ কোটি ডলারে নেমেছে। এর বাইরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে দেয়া হয়।
সেই হিসাব প্রকাশ করা হয় না। আইএমএফ সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১ হাজার ৭০০ কোটি বা ১৭ বিলিয়ন ডলারের কম।
বাংলাদেশকে দেয়া আইএমএফ’র ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের বেশ কয়েকটি শর্তের মধ্যে আছে আগামী ডিসেম্বরে প্রকৃত রিজার্ভ ২ হাজার ৬৮০ ডলারে রাখা। তবে শর্ত অনুযায়ী রিজার্ভ রাখতে পারবে না বলে আইএমএফকে এরই মধ্যে জানিয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থনীতিবিদরে মতে, আগামী দুই মাসে রিজার্ভ আরও অনেক কমে যেতে পারে। পাশাপাশি ডলারের বিনিময় হার আরও অনেক বেড়ে যেতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা। তাদের মতে নভেম্বরের শুরু থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এক ডলারের বিনিময় হার দেড় বাংলাদেশী টাকায় উঠতে পারে। আর নির্বাচনের ঠিক আগ মুহুর্তে রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রবাসীরা খুব বেশি অর্থ দেশে পাঠাবে না বলেও তাদের ধারণা। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী প্রায় এক কোটি পবাসীরা দেশে অর্থ পাঠানো অনেক কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে বাংলাদেশে এখন ডলার সংকটও চরমে রয়েছে। ডলারের অভাবে বহু এলসি খোলা যাচ্ছে না। বৈদিেশক ঋণ পরিশোধ করা যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা ডলারের অভাবে বিদেশে পড়তে যেতে পারছে না।
যদিও সরকার বৈদেশিক মূদ্রা দেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে আড়াই শতাংশ প্রনোদনা বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করেছে। তারপরও প্রবাসীরা ডলার দেশে পাঠাতে খুব একটা আগ্রহী হচ্ছে না।