Home 2nd Featured টিভিতে লাইভ চলাকালে ভারতের সাবেক এমপি ও তার ভাইকে গুলি করে হত্যা

টিভিতে লাইভ চলাকালে ভারতের সাবেক এমপি ও তার ভাইকে গুলি করে হত্যা

Mukto Chinta
০ comment ৭৫ views

পুলিশের সামনেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে ভারতের সাবেক এক এমপিকে। এসময় তার সাথে থাকা তার ভাইকেও একইভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার সময় সাবেক ওই ভারতীয় এমপি টিভিতে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন এবং পুলিশ সদস্যদের পাহারার অধীনে ছিলেন।

আর এই টিভি ক্যামেরার সামনেই তারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে। উত্তর প্রদেশের এই শহরটি এলাহাবাদ নামেও পরিচিত। রোববার (১৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অপহরণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে পুলিশ হেফাজতে থাকা সাবেক এক ভারতীয় রাজনীতিবিদ ও এমপিকে তার ভাইসহ লাইভ টিভির সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ভারতের নিহত ওই সাবেক এমপির নাম আতিক আহমেদ। তিনি হত্যা ও হামলার অভিযোগের মুখোমুখি হয়ে পুলিশ পাহারার অধীনে ছিলেন।

ক্যামেরার সামনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় হামলাকারীরা খুব কাছ থেকে আতিক আহমেদের মাথায় বন্দুক দিয়ে গুলিবর্ষণ করে এবং তিনি লুটিয়ে পড়েন। পরে পাশে থাকা তার ভাইকেও গুলি চালিয়ে হত্যা করে হামলাকারীরা। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।

বিবিসি বলছে, হামলা চালানোর সময় সাংবাদিকের ছদ্মবেশে ছিলেন তিন হামলাকারী। গুলি চালিয়ে দু’জনকে হত্যার পরে অভিযুক্ত তিনজন দ্রুত আত্মসমর্পণ করেন এবং তাদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয় বলে স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে।

হামলায় নিহত আহমেদ আতিকের কিশোর ছেলে কয়েকদিন আগে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। এছাড়া পুলিশের কাছ থেকে নিজের জীবনের হুমকি ছিল বলে এর আগে দাবি করেছিলেন আহমেদ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, আহমেদ আতিক এবং তার ভাই আশরাফকে গুলি করার কয়েক সেকেন্ড আগে প্রয়াগরাজের কাছাকাছি একটি হাসপাতালে মেডিকেল চেকআপের জন্য যাচ্ছিলেন এবং সেই পথে তারা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছিলেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, মেডিকেল টেস্ট করানোর জন্য প্রয়াগরাজের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল আতিক আহমেদ ও তার ভাই আশরফকে। প্রিজন ভ্যান থেকে নামতেই হাসপাতালের সামনে আতিক ও তার ভাই আশরফকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা।

পুলিশি এনকাউন্টারে ছেলে আসাদের মৃত্যু ও তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যেতে না পারা নিয়েই নানা প্রশ্ন করছিলেন সাংবাদিকরা। এরই একপর্যায়ে হঠাৎ এক ব্যক্তি হাত উঁচিয়ে এসে আতিকের মাথায় বন্দুক ঠেকান এবং ট্রিগারে চাপ দেন। আতিক মাটিতে লুটিয়ে পড়ার সময়ই আরও কয়েকটি এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করা হয়।

একইসঙ্গে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় তার ভাই আশরফকেও। পুলিশের সামনেই পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে গুলি করে দুই অপরাধীকে খুনের ঘটনায় গোটা উত্তর প্রদেশে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যেই হামলাকারী তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শান্তি বজায় রাখতে উত্তর প্রদেশের সকল জেলাই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, আহমেদকে জিজ্ঞাসা করা হয় তিনি তার ছেলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিয়েছিলেন কিনা এবং ক্যামেরার কাছে তার শেষ কথা ছিল: ‘তারা আমাদের নেয়নি, তাই আমরা যাইনি।’

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সন্দেহভাজন ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঘটনাস্থল থেকে। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, সাংবাদিক সেজে ভিড়ের মধ্যেই অবস্থান করছিল হামলাকারীরা। আতিক আসতেই কথা বলার অজুহাতে পুলিশকে টপকে একদম পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জে পৌঁছে যায় হামলাকারীরা এবং গুলিবর্ষণ করে।

এদিকে এই ঘটনার পরই রাতারাতি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। অশান্তি রুখতে উত্তর প্রদেশের সব জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

বিবিসি বলছে, গত মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট আতিক আহমেদের আবেদনের শুনানি করতে অস্বীকার করে। ওই আবেদনে তিনি পুলিশের কাছ থেকে তার জীবনের হুমকি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

উত্তরপ্রদেশ হিন্দু-জাতীয়তাবাদী বিজেপি শাসন করছে এবং বিরোধী দলগুলো এই হত্যাকাণ্ডকে নিরাপত্তার ত্রুটি বলে সমালোচনা করেছে।

গত ছয় বছরে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে পুলিশের হাতে বিভিন্ন অভিযোগের সম্মুখীন ১৮০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনার মাধ্যমে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে বিরোধী দলগুলো।

এছাড়া মানবাধিকার কর্মীরাও উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ এনেছেন। তবে রাজ্য সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

You may also like

Leave a Comment

Muktochinta

Multochinta is a famous news media from New York. 

Subscribe my Newsletter for new blog posts, tips & new photos. Let's stay updated!

All Right Reserved. 2022 emuktochinta.com