লিবিয়ায় তীব্র রাজনৈতিক বিভক্তির কারণে দেশের পূর্ব ও পশ্চিম দুই অংশে পৃথক দুই দিনে চলতি বছরের ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে।
দেশটির এক অংশে মাসব্যাপী রমজান শেষ হয়েছে ২৯ দিনে আর অপর অংশে পুরো ৩০ রোজা পালন করা হয়েছে। এ কারণে দেশটিতে ঈদের ছুটিও আলাদা আলাদা দিনে শুরু হয়েছে।
পূর্ব লিবিয়ার পার্লামেন্টকে সমর্থন করে সেখানকার ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ঈদের চাঁদ দেখা গেছে। এ কারণে শুক্রবার হবে ঈদ। সেই অনুযায়ী, শুক্রবার ঈদ উদযাপন করেছেন পূর্ব লিবিয়ার লোকজন।
অন্যদিকে, রাজধানী ত্রিপোলিতে ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় সরকার সমর্থিত ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ঈদের চাঁদ দেখা যায়নি। এ কারণে শনিবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন রাজধানীসহ পুরো পশ্চিম লিবিয়া।
ঈদুল ফিতর কবে হবে—বিশ্বের প্রতিটি দেশেই তা নির্ধারণ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু লিবিয়ার অবস্থা খানিকটা ভিন্ন।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো সমর্থিত সরকারবিরোধী বিদ্রোহীগোষ্ঠীর হাতে ২০১১ সালে লিবিয়ার শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির নিহত হওযার পর থেকে থেকে দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা টালমাটাল হয়ে পড়ে এবং ২০১৪ সালে বিচ্ছিন্ন না হলেও পূর্ব ও পশ্চিম— দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় লিবিয়া। ফলে, দেশটিতে এখন কার্যত দু’টি সরকার ক্ষমতাসীন।
শুক্রবার দেখা গেছে, লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের লোকজনের পাশাপাশি রাজধানী ত্রিপোলিতেও অনেকে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন, অন্যদিকে ত্রিপোলির অন্যান্য লোকজন ও পশ্চিমাঞ্চলের লোকজন তখনও রোজার উপবাস পালন করছেন।
ত্রিপোলির অনেকেই আবার পূর্ব লিবিয়ার সঙ্গে মিল রেখে শুক্রবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছেন। ৫০ বছর বয়সী আহমেদ মেসবাহ তাদেরই একজন।
রয়টার্সকে মেসবাহ বলেন, ‘(ঈদ নিয়ে) লিবিয়াতে যা শুরু হয়েছে…এটা স্রেফ পাগলামি। কারণ, ক্ষমতাবানদের দ্বন্দ্ব-সংঘাতের কারণে আমরা সাধারণ লোকজন বিভক্ত হয়ে পড়ছি। আমার একান্ত প্রার্থনা— এই পাগলামি যেন চলতি বছরই শেষ হয়।’