Home Featured নিউইয়র্ক সিটিতে খুনীদের রাজত্ব

নিউইয়র্ক সিটিতে খুনীদের রাজত্ব

পুলিশের উপর বারবার গুলি

Mukto Chinta
০ comment ৯৮৭ views

মাহাথির ফারুকী : নিউইয়র্ক আবারও অশান্ত হয়ে উঠছে। অস্ত্রবাজ খুনীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রায় প্রতিদিনই সন্ত্রাসীদের হাতে খুনের ঘটনা ঘটছে। সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভ‚গছে। রাস্তায়, বাসে, ট্রেনে এমনকি নিজ কর্মস্থলেও নিরাপত্তার অভাব। হঠাৎ করেই এ এক ভিন্ন নিউইয়র্ক হয়ে উঠছে। কোথাও যেনো স্বস্তি নেই, শান্তি নেই, নিরাপত্তা নেই। মানুষ ভয়ে কুকড়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ পুলিশের উপর ভরসা করলেও সেই পুলিশও এখন সন্ত্রাসীদের টার্গেটে পরিনত হয়েছে। নিউইয়র্কের মতো অবস্থা ক্যালিফোর্নিয়াসহ আরও কয়েকটি স্টেটেও। আইনজ্ঞ এবং পুলিশ কর্মকর্তারা মনে করছেন সময় এসেছে ‘বেইল রিফর্ম’ সংশোধনের।


সারা পৃথিবীজুড়ে রয়েছে নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট বা এনওয়াইপিডি’র সুনাম। কিন্তু নিউইয়র্কের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন অবস্থা হয়েছে যে, দিনদিন তা নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই হামলা, খুন, লুটপাট আর ভাঙ্চুরের ঘটনায় সাধারণ মানুষ আর নিউইয়র্ক নগরীতে নিজেদের খুব একটা নিরাপদ ভাবতে পারছেন না। প্রকাশ্য দিবালোকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট, অস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপর গুলি, সাবওয়েতে ধাক্কা দিয়ে টেনের নিচে মানুষ ফেলে মেরে ফেলা এ যেনো নৈমত্তিক ঘটনায় পরিনত হয়েছে। অবস্থা এমন হয়েছে যে সাধারণ মানুষের পাশপাশি, পুলিশও যারপর নাই ক্ষুব্ধ এসব ঘটনায়। যদিও এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রনে পুলিশের শত চেষ্টাও আর কাজে লাগছে না একটি আইনের কারণে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এই চরম অবনতিতে নবনির্বাচিত সিটি মেয়রও স্বীকার করেছেন তার অসহায়ত্বের কথা।


গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের অপরাধপ্রবন এলাকা হিসেবে পরিচিত হারলেমে ২২ বছর বয়সের একজন প্রতিভাবান পুলিশ অফিসার জেসন রিভেরা সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। তার সাথে থাকা অপর অফিসার উলবার্ট মোরা’ও একই সন্ত্রাসীর গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জানা গেছে, খুনী লেশন ম্যাকনেইল নিজেও পুলিশের পাল্টা গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে আছে। নিহত পুলিশ অফিসার ও তার সহকর্মিরা একজন মহিলার ৯১১ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তারা গুলির শিকার হন।


শুক্রবার রাতেই এক সংবাদ সম্মেলনে এনওয়াইপিডি’র পুলিশ কমিশনার কিচ্যান্ট শেওল বলেছেন, ‘আমি এই শোক প্রকাশ করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, ‘আমরা শোকাহত, রাগান্বিত, এই হামলা পুরো ডিপার্টমেন্টের উপর, এই ঘটনায় সমগ্র শহরের মানুষ কষ্ট পেয়েছে। এই কষ্টের ভাষা প্রকাশ করার মতো না।’


যদিও নতুন এই পুলিশ কর্মকর্তা তার নিয়োগের পর থেকেই এ ধরনের একাধিক ঘটনায় প্রায় একই ভাষায় ক্ষোভ এবং প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। এর কোনো সুফল এখনও পর্যন্ত সাম্প্রতিক সময়ে নগরবাসী দেখতে পায়নি।
পুলিশের তথ্যমতে খুনী ম্যাকনেইল আগে থেকেই সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভ‚ক্ত। সোস্যাল মিডিয়ায় তার একাউন্টে সরকার এবং পুলিশবিরোধী অনেক পোস্ট রয়েছে। এর আগেও সে পাঁচবার গ্রেফতার হয়েছে নানা অপরাধে । কিন্তু বারবারই সহজে জামিন পেয়ে বাইরে চলে এসেছে। ২০০৩ সালের একটি মাদক মামলায় সে গ্রেফতার হয়েছিলো। ২০০২ সালেও সে একজন পুলিশ অফিসারের উপর হামলা করেছিলো। সেই ঘটনার পরেও সে আরও দুইবার মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলো। ১৯৯৮ সালেও সে অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে গ্রেফতার হয়েছিলো।


শুক্রবার রাতের এই ঘটনার পর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা এবং ন মেয়র এরিখ এডামসও বরাবরের মতোই নিউইয়র্ক সিটিকে নিরাপদ রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘আমাদের শহর খুনীদের বিরুদ্ধে। এই হত্যাকে মাত্র একজন সাহসী অফিসারের মৃত্যু না বলে এটাকে পুরো সিটির উপর আক্রমন বলে আখ্যায়িত করেছেন। যদিও তিনি সাম্প্রতিক সময়ে একই ধরনের কথাই বারবার বলেছেন। তিনি নিজেও গত সপ্তাহে এমনই একটি ঘটনার উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘আমি নিজেও আর নিজেকে নিরাপদ মনে করছি না।’ নিজের শহরের ঘটনা হলেও তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি ঈঙ্গিত করে বলেছেন, ‘আমরা এই শহরে কোনো অস্ত্র তৈরি করি না। ’ অস্ত্র নিয়ন্ত্রনে তিনি কিছু একটা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি অনুরোধ করেছেন। পুলিশ অফিসার হত্যার এই ঘটনায় গভর্নর ক্যাথি হকুলসহ স্বয়ং প্রেসিডেন্ট বাইডেনও টুইট করে সন্ত্রাসী ঘটনার নিন্দা ও পুলিশ অফিসারের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাপক লুটপাট, পুলিশের উপর গুলি , সাবওয়ে হামলা


শুক্রবারের এই গুলির ঘটনাই শেষ নয়। চলতি সপ্তাহে পুলিশের উপর আরও একাধিক গুলির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার মাত্র একদিন আগে ২০ জানুয়ারি স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে একজন ডিকেটিভ পুলিশ অফিসারকে পায়ে গুলি করে একজন মাদক কারবারী।
তার মাত্র দুইদিন আগে ১৮ জানুয়ারি একজন কিশোর গ্যাং সদস্য একজন পুলিশ অফিসারকে গুলি করে। এর আগে একজন পুলিশ অফিসার তার গাড়িতে থাকা অবস্থাতেই মাথায় গুলিবিদ্ধ হন।


একই ব্যক্তি জামিন পেয়ে একই দিনে একাধিক অপরাধ করার নজীরও রয়েছে। কারণ ওই অপরাধী জানে যে, তাকে জামিন দেয়া হবে। কিছু এনজিও রয়েছে যারা ভুক্তভোগীদের চিন্তা না করে তাদের পাশেই থাকছে।
খুন আর লুটপাটের পাশাপাশি সাবওয়েতে ধাক্কা দিয়ে রেললাইনের উপর বা চলন্ত টেনের নিচে ফেলে দেওয়া নতুন এক আতঙ্কের নাম। সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরণের অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। যে কারণে অনেকেই ভয়ে এখন আর সাবওয়ে ব্যবহার করতে চান না। মানুষের সাবওয়ে এড়িয়ে যাওয়ার কারণে যাত্রী সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। যদিও এখন সিটির প্রায় সবগুলো গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম সাবওয়েতে অতিরিক্ত পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

গত ১৫ জানুয়ারি টাইমস স্কোয়ার ব্যস্ততম স্টেশনে বহু মানুষের সামনেই একজন মহিলা যাত্রীকে এক কৃষনাঙ্গ ধাক্কা দিয়ে চলন্ত ট্রেনের নিচে ফেলে দেয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। অভিযুক্তকে পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়েছে। এই ঘটনার মাত্র এক সপ্তাহ পর গতকাল ২৩ জানুয়ারি ম্যানহাটনের ফুলটন স্ট্রিট সাবওয়ে স্টেশনে ৬১ বছরের এক বৃদ্ধকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হয়। আশ্কংাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। অপরাধীকে পুলিশ এখনও ধরতে পারেনি।


এর আগে মাত্র একমাসের ব্যবধানে একই ধরনের আরও কয়েকটি ঘটনা ঘটে। তাদেরকেও কোনো কারণ ছাড়াই ধাক্কা দিয়ে রেলাইনে ফেলে দেয়া হয়। এসব হামলার বেশিরভাগ শিকার হচ্ছেন এশিয়ানরা। বিশেষ করে চাইনীজ এবং কোরিয়ানরা। এসব হামলার শিকার কেবল সাধারণ মানুষ হচ্ছে তাই নয়, ট্রানজিট ওয়ার্কারদের উপরও হচ্ছে।


এরিখ এডামস সাবওয়েতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়ার বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি নিজেও ভয়ে আছেন বলে জানিয়েছেন। একইসাথে তিনি বলেছেন, এদের মানসিক অবস্থার কথাও বিবেচনায় নেয়া দরকার। একইসাথে তিনি বলেছেন, হোমলেস মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এ ধরণের অপরাধ বাড়ছে।
উল্লেখ করা যায়, এ বছরে গত বছরের চেয়ে ৬৫ ভাগ সাবওয়ে বা ট্রানজিট ক্রাইম বেড়েছে। চলতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহেই এ ধরণের ৯৬টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ‘সাবওয়ে ধাক্কা’ আতঙ্কে যাত্রীসংখ্যা প্রায় ৬৫ ভাগ কমে গিয়েছে।

গত ১৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে এনওয়াইপিডি’তে কর্মরত ক্যাপ্টেন কারাম চৌধুরী। সাম্প্রতিক এ সব সন্ত্রাসী ঘটনার বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে একজন অভিজ্ঞ পুলিশ অফিসার হিসেবে তিনি ‘ বেইল রিফর্ম’’র সংশোধনীর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। তিনি বলেন, এই আইনের সুযোগ নিয়ে ছোট সন্ত্রাসীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। একই ব্যক্তি বারবার একের পর এক অপরাধ করেই যাচ্ছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একজন অপরাধীকে ধরার কয়েক ঘন্টা পর জামিন পেয়ে আবারও অপরাধ করছে। কারাম চৌধুরীর মতে, পুলিশ তার কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু আইনের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসীরা বারবার অপরাধ করার রাস্তা খুঁজে নিচ্ছে । কারাম চৌধুরী বলেন, এখন যা হচ্ছে এটা শুধু পুলিশ বাহিনীর উপর হামলা নয়, এটা সবার জন্যই সমস্যা। এটা প্রত্যোক পরিবার, ব্যক্তি এবং সমাজব্যবস্থার উপর কুপ্রভাব ফেলছে। কারাম চৌধুরীর মতে, সন্ত্রাসীরা জামিন পেয়ে বারবার অপরাধ করার কারণে পুলিশ ‘ডিমোরালাইজড’ হয়ে যাচ্ছে বা তার নৈতিক শক্তি হারিয়ে ফেলছে।

অপরাধীরা সহজে ছাড়া পেয়ে যাবার সুযোগ করে দিয়েছে একটি আইন। যার নাম ‘বেইল রিফর্ম বিল।’ ২০১৯ সালের পহেলা এপ্রিল এটি আইনে পরিনত হলেও ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়। এই আইনে ছোটখাটো অপরাধের জন্য জামিন পেতে আর্থিক জামিনদারের প্রয়োজন হয় না। নন ভায়োলেন্ট অপরাধের জন্য জামিন সহজ হয়ে যায়। কারাগারের চাপ কমানোর জন্য বা যারা জামিনের সুযোগ কম তাদের কথা মাথায় রেখেই এই আইন করা হয়েছিলো। উল্লেখ করা দরকার বর্তমানে সারা যুক্তরাষ্ট্রে ছোট বড় অপরাধী মিলিয়ে ২২ লাখ কারান্দি রয়েছে। সারা বিশ্বের পাঁচ ভাগের একভাগ বন্দি শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই রয়েছে। যদিও এই আইন করা হয়েছিলো ছোট অপরাধীর বড় সাজার হাত থেকে বাছচানোর চন্য। কিন্তু সেই আইনটিই এখন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক স্টেটে বিশেষ করে নিউইয়র্কের শান্তি নষ্ট করার বড় কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।


যেসব স্টেটে এই একই ধরনের বা কাছাকাছি ধরনের রিফর্ম করা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম নিউইয়র্ক, ক্যালিফোনিৃয়া, পেলসালভেনিয়া, ইলিনয়, নিউজার্সি। এই বেইল রিফর্মের আওতায় সহজশর্তে অথবা কোনো শর্ত ছাড়াই জামিনের সুযোগ থাকায় গত ডিসেম্বরে ক্যালিফোর্নিয়াতে ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
ক্যালিফোর্নিয়াতে গত বছরের শেষের দিকে একাধিক বড় বড় ভ্রান্ডস্টোরে লুটপাট চালানো হয়। যারা এই লুটপাটে জড়িত তাদের বেশিরভাগই একই ধরনের অপরাধে আগে থেকেই অভিযুক্ত। এসব ব্রান্ড স্টোরের মধ্যে রয়েছে লুই ভুটান, বারবারি, বলুমিংডেলস , ওয়ালমার্ট, নর্থস্টর্ম ইত্যাতি।


চণতি মাসে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি জুয়েলারি স্টোরে প্রকাশ্যে লুটপাট চালায় লুটেরারা। এই জুয়েলারি স্টোরের আশেপাশের অনেকগুলেঅ স্টোরে একই সন্ত্রাসীরা লুটপাট চালায়। সেই ভয়ে হার্ট অব গোল্ড নামের এই জুয়েলারিটি এক সপ্তাহ বন্ধ রাখার পরে যেদিন খুলে সেদিনই লুটেরাদের কবলে পড়ে। এসব ঘটনার সবগুলোই ছিলো অর্গানাইজড ক্রাইম। সবগুলো ঘটনাতেই ১৫ জন থেকে শুরু করে ৭০ বা ৮০ বড় গাড়িয়ে নিয়ে লুটপাট চালায়। এসব বিষয় নিয়ে ব্যবসায়ীরা সেখানকার পুলিশের শরনাপন্ন হলে পুলিশ তাদের জানায় এদেরকে ধরার জন্য আরও বেশি প্রমানের দরকার। সেইসাথে আরও বড় অপরাধ না করলে তাদেরকে ধরেও জেলে রাখার কোনো আইন নেই। পুলিশ প্রকৃতপক্ষে তাদের অপারগতার কথাই জানায়। এসব সিরিজ ঘটনার পর সেখানকার অনেক বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়।


নর্থস্টর্মে লুটেরা যেভাবে লুট করেছে সেটা একটা খারাপ উদাহরণ। তারা প্রায় ৮০ জনের একটি অর্গানাইজ ক্রাইম গ্রæপ সেখানে লুটপাট করে বড় বড় গাড়িে গিয়ে। গাড়িতে জিনিসপত্র তুলে তারা চলে যায়।
লসএঞ্জেলেসে একটি ট্রেনে লুটপাট কে আমাদের লাখ লাখ ডলারের জিনিস লুট করে নিয়ে যায়।
ক্যালিফোর্নিয়ার লুটের ঘটনাগুলো নিয়ে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্রের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিলো
গত বছরের শেষের দিকে নিউইয়র্কে আপার ইস্ট সাইডে বড় ধরনের একটি লুটের ঘটনা ঘটে গিভেন্সি স্টোরে। সেখান থেকে তারা প্রায় এখ লাখ ডলারের মামলাল নিয়ে যায়।
যেসব সিটিতে এমন ঘটনা বেশি ঘটছে সেগুলেঅর অন্যতম হচ্ছে, লস এজ্চেলেস, সানফ্রান্সিসকো, শিকাগো, মায়ামি এবং নিউইয়র্ক সিটি।

শিকাগোর নর্থওয়েস্ট সাইডে গত ২১ জানুয়ারি রাত দুইটার দিকে মাত্র ২০ মিনিটের ব্যবধানে তিনটি কারেন্সি একচেঞ্জে ঢাকাতি করে এক গ্রæপ। তারা সেই সময় একটি স্টোরে রক্ষিত এটিএম ম্যাশিনও তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। তিনটি একচেঞ্জে সফল না হলেও একটিতে তারা পুরোপুরি সফল হয় সবকিছু নিয়ে যেতে।
এই ঘটনায় পুলিশ নিশ্চিত হতে পারেনি যে, এটা একটি গ্রæপই করেছে নাকি একাধিক গ্রæপ আলাদাভাবে করেছে। পুলিশ সন্দেভাজনদের বিষয়ে কোনো ধারণাই পায়নি এখনও পর্যন্ত। ২০২২ সালের এই তিন সপ্তাহেই শিকাগোতে ২২ টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। গত বছর শিকাগোতে প্রায় ৮০০ টি খুনের ঘটনা ঘটেছিলো।
যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রম কোর্টের আইজীবি অ্যাটর্নী মঈন চৌধুরী কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘ এখন ‘বেইল রিফম’র রিফর্ম দরকার। তিনি এই আইনে ব্যাখ্যা তুলে ধরে বলেন, যারা দরিদ্র কিন্ত ছোট অপরাধ করেছে তাদের আর্থিক অসঙ্গতির কথা চিন্তা করে সবাই এটার পক্ষে ভোট দিয়েছিলো। যাদের বেইলবন্ড নেয়ার অর্থ নেই তাদের জন্য মূলত এটা করা হয়েছিলো। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এটা এটার সুযোগ এখন পেশাদার অপরাধীরাও নিচ্ছে। তিনি মনে করেন, ঢালাওভাবে সব মামলা বেইল রিফর্ম’র আওতায় না এনে গুরুতর অপরাধের মামলাগুলো আলাদাভাবে সনাক্ত করে সেগুলোর জন্য আলাদাভাবে ব্যবস্থা নেয়ার সময় হয়েছে। তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধিরা ভালোর জন্যই সবাই এটার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে পেশাদার অপরাধীরাও এটার সুফল ভোগ করছে। যে সার্বিকভাবে আমাদের সবার জন্য ক্ষত্রির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
নাম প্রকাশ না করে একজন পুলিশ অফিসার দুঃখ করে বলেন, একজন অপরাধীকে আমরা খুঁজছিলাম। যে কিনা অর্ধশতাধিক চুরির ঘটনার সাথে জড়িত। সে চুরি করতে করতে এলাকাবাসীকে অতিষ্ট করে তুলেছিলো। কিন্তু আমরা তাকে বহু চেষ্টার পরে হারলেম থেকে গ্রেফতার করার কিছুক্ষ পরেই জামিন পেয়ে যায়। তার প্রশ্ন ‘ তাহলে আমরা এতগুলো অফিসার এতদিন ধরে চেষ্টা করে তাকে ধরলাম কিন্তু কি লাভ হলো ?
একজন ডিটেক্টিভ অফিসারও তার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমি একজনকে গ্রেফতার করার পর আদালতে পাঠাই। অন্য অফিসারের সাথে কথা বলতে বলতেই ওই আসামী জামিন নিয়ে থানায় চলে আসে তার পৈান এবং ঘড়ি নেয়ার জন্য। তিনি এতটুকু বলেই ‘বেইল রিফর্ম’র কুফল তুলে ধরেন।

You may also like

Leave a Comment

Muktochinta

Multochinta is a famous news media from New York. 

Subscribe my Newsletter for new blog posts, tips & new photos. Let's stay updated!

All Right Reserved. 2022 emuktochinta.com