বিশেষ প্রতিবেদন
একজন মানুষ যখন তার অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর সৎ স্বপ্ন নিয়ে পথ হাঁটে সেই পথ খুব কুসুমাস্তীর্ন না হলেও গন্তব্য অসাধ্য নয়। প্রতিটি মানুষের যেমন জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছানোর একটি স্বপ্ন থাকে, ঠিক তেমনি একটি স্বপ্ন কমিউনিটির প্রিয়মুখ শাহ নেওয়াজেরও রয়েছে। তবে সেই লক্ষ্যে যেতে কারো ক্ষতির কারণ তিনি হতে চান না, কারো মনেও তিনি দুঃখ দিতে চান না। সবাইকে সাথে নিয়েই তিনি সেই স্বপ্ন পূরণ করতে চান। কারণ শাহ নেওয়াজের স্বপ্ন প্রকৃতপক্ষে তার নিজের একার বা তার পরিবারের স্বপ্ন নয়।এই স্বপ্ন কমিউনিটির সব মত ও পথের মানুষকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাবার স্বপ্ন। কমিউনিটিকে মূলধারার সাথে মিলিয়ে দেবার স্বপ্ন। এই স্বপ্ন মানুষকে কিছু দেবার স্বপ্ন। সবাইকে একতাবদ্ধ রাখার স্বপ্ন। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কমিউনিটি লিডার সবার প্রিয় শাহ নেওয়াজ এভাবেই প্রকাশ করেন তার স্বপ্নের কথা। তিনি কি স্বপ্ন দেখছেন কমিউনিটির জন্য প্রশ্ন করতেই তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের সবচেয়ে গর্বিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রিধারী শাহ নেওয়াজ মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী কমিউনিটির পরিধি অনকে বেড়েছে। বিশেষ করে নিউইয়র্কের বাংলাদেশী কমিউনিটি এগিয়ে যাচ্ছে আপন গতিতে। কিন্তু তুলনামূলকভাবে যতটুকু এগিয়ে যাবার কথা ছিলো সেটা হয়তো এখনও সম্ভব হয়নি। তবে যতটুকু অগ্রগতি হয়েছে সেটাকেও তিনি খাটো করে দেখতে চান না। তার মতে কমিউনিটি অভিষ্ঠ লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছে।
শাহ নেওয়াজ জানান, ২০০৬ সাল থেকে তিনি যখন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন সেই সময়কার তুলনায় কমিউনিটি এখন অনেক বেশি অগ্রসর হয়েছে। অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন তিনি দেখেছেন বলেও জানান। তার মতে, এই ধারাটিই যদি অব্যাহত থাকে তাহলে অচীরেই বাংলাদেশী কমিউিনিটি নিউইয়র্কের মূলধারার নিজেদের অবস্থান আরও পাকাপোক্ত করতে পারবে বলে তার বিশ্বাস।তিনি নিজেও কমিউনিটির মানুষের অনুরোধে আগামীতে নিজেকে আরও বেশি করে মূল¯্রােতের সাথে সম্পৃক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানেও তিনি কমিউনিটি বোর্ডের অন্যতম সদস্য।
মাত্র দেড় দশকের মধ্যেই শাহ নেওয়াজ নিজেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হয়েছেন নিজের ও স্ত্রী, সন্তানদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। দুই সন্তানের জনক শাহ নেওয়াজ এখনও স্বস্ত্রীক সকাল-সন্ধ্যা অফিস করেন। কমিউিনিটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিজের সরব উপস্থিতি বজায় রাখেন। কমিউনিটির সব ধরনের ইতিবাচক অনুষ্ঠান বিশেষ করে কমিউনিটির সভা-সমাবেশ, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সব সময়ই শাহ নেওয়াজ মধ্যমনি হয়ে উপস্থিত থাকেন। বিশ্ব মহামারি করোনাকালের খুব দূযোর্গপূর্ণ সময়ে কত মানুষকে যে তিনি আর্থিক ও মানসিক সাহায্য করেছেন তার শেষ নেই। তবুও তার মনে অতৃপ্তি থেকে গেছে এই ভেবে যে, কেউ কি তার সহযোগিতা থেকে বাদ পড়েছে?
শাহ নেওয়াজ জানান, তার জীবনের চাহিদা আর প্রাপ্তির মধ্যে অনেক বেশি প্রার্থক্য না থাকলেও এখনও নিজেকে সমাজ সেবায় নিয়োগের স্বার্থে আরও কিছু পথ তার পাড়ি দেবার বাকী রয়েছে। সেই পথ মূলধারায় মিশে যাবার পথ। সেই পথ কমিউনিটিকে মূলস্রোতের সাথে আরও সম্পৃক্ত করার পথ।
প্রবাসের ব্যস্ত জীবনে শাহ নেওয়াজ অনেকগুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যোগ্যতার সাথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সেসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম নিউইয়র্ক ইন্সুরেন্স ব্রোকারেজ, গোল্ডেন এ্যাজ হোম কেয়ার অন্যতম। রয়েছে কার এ্যান্ড লিমো সার্ভিস, প্রপ্রার্টিজ ব্যবসাসহ আরও অনেক কিছু। তিনি একাধিক মিডিয়ার সাথেও জড়িত রেখেছেন নিজেকে। প্রবাসের মতো দেশেও তিনি নিজেকে বিভিন্ন ব্যবসার সাথে জড়িয়ে রেখেছিলেন। প্রবাসেও তিনি জ্যাকসন হাইটস বিজনেস এসোসিয়েশনসহ অনেকগুলো সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নের্তৃত্বে ছিলেন এবং আছেন।
শাহ নেওয়াজ জানান, কমিউনিটির মানুষের সহযোগিতার কারণে স্বল্প সময়ের মধ্যেই তার সবগুলো ব্যবসাই মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। তিনি জানান, বিশেষ করে গোল্ডেন এ্যাজ হোম কেয়ার এরই মধ্যে শুধুমাত্র নিউইয়র্কেই ৯ টি শাখা খুলেছে। প্রবীন ও অসুস্থ মানুষের জন্য হোম কেয়ার সেবা দোড়গোড়ায় নিয়ে যেতেই এতগুলো শাখা খোলা হয়েছে বলে জানালেন শাহ নেওয়াজ।
সদালাপী লায়স শাহ নেওয়াজ একজন বন্ধুবৎসল মানুষ হিসেবে কমিউনিটিতে পরিচিত। প্রত্যেক মানুষের সাথেই তিনি সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে পছন্দ করেন। সংস্কৃতিপ্রেমী শাহ নেওয়াজের স্ত্রী রানো নেওয়াজ প্রবাসের একজন জনপ্রিয় শিল্পি। প্রবাসের প্রায় সব অনুষ্ঠানেই তার প্রানবন্ত গানের উপস্থাপনা সবাইকে মুগ্ধ করে। শাহ নেওয়াজের সবগুলো ব্যবসাতেই রানো নেওয়াজের সহযোগিতা তাকে সামনে দিকে এগিয়ে যেতে ওতপ্রোতভাবে সাহায্য করে।
শাহ নেওয়াজ আশা করেন, তার স্বপ্ন একদিন পুরণ হবে। তিনি কমিউনিটির জন্য যে কাজগুলো করতে চান সে জন্য সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।