রমজান এলেই সিডনির লাকেম্বা আরও প্রাণোচ্ছল হয়ে উঠে। মাসব্যাপী চলে রমাদান ফেস্টিভাল। মুসলিম সংস্কৃতি উপস্থাপনে এক উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে শহরটিতে।
রেলওয়ে প্যারেড ও হ্যাল্ডন স্ট্রিটে দেখা মেলে চিরচেনা ইফতারের আয়োজন, পরবাসে এ আয়োজনে তৃপ্ত হয় স্বদেশ লালন করা অভিবাসী বাংলাদেশিরা। প্রায় প্রতিটি খাবারের দোকানে দেশীয় আমেজে সাজানো হয় ইফতারের আয়োজন। রকমারি এসব খাবারের মধ্যে ঠাঁই পায় ছোলা, পেঁয়াজি, বেগুনি, ঘুগনি, আলুর চপ, জালি কাবাব, চিকেন ফ্রাই, হালিম, জিলাপি এবং হরেকরকম মিষ্টি ও শরবত। এছাড়া থাকে ভিন্ন স্বাদের ফলের জুস, বার্গার, বারবিকিউসহ অস্ট্রেলিয়ান খাবারের উপস্থিতি।
দেখা যায় ভিন্ন ঘরানার রুটি চেনাই ও খাটাখাট, আরও আছে কানাফান্ডি, ক্যামেল বার্গার, আফগানী মুঘলাই। দেশীয় ও মধ্যপ্রাচ্য খাবারের দাপট যেন একটু বেশি সঙ্গে আছে তার্কিশ খবারের সাবলীল সমন্বয়।
মুখরোচক এসব খাবারের স্বাদ নিতে শুধু মুসলিমরাই নয়, অন্যান্য ধর্মালম্বী মানুষরাও ভিড় করেন। এই স্বাদের ভিন্নতায় আরও যোগ হয় আরবদের বিখ্যাত চাদানি।
সব মিলিয়ে মুসলিম অধ্যুষিত লাকেম্বাকে ঢাকার ইফতার বাজারের সঙ্গে তুলনা করলে কোনো অংশে কম হবে না।
বরাবরের মতো এ বছর ২ এপ্রিল থেকে ১ মে, প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে ভোর ৩টা পর্যন্ত বসছে এ আয়োজন। রেলওয়ে প্যারেডে ও হ্যাল্ডন স্ট্রিটে এ উৎসবকে প্রশমিত করতে সরকারি সমর্থন লাভ করেছে আয়োজকরা।
বহু-সংস্কৃতির মন্ত্রী মার্ক কোরে রমজান নাইটস লাকেম্বা উৎসবের জন্য নিউ সাউথ ওয়েলস সরকার কর্তৃক ক্যান্টারবেরি ব্যাঙ্কসটাউন সিটি কাউন্সিলকে দুইশ পঞ্চাশ হাজার ডলার সহায়তার ঘোষণা দেন।
রমাদান ফেস্টিভাল এই উৎসবটি দীর্ঘ পনেরো বছরের বেশি সময় ধরে সিডনির লাকেম্বা রেলওয়ে প্যারেড ও হ্যাল্ডন স্ট্রিটে ধারাবাহিকভাবে হয়ে আসছে। স্থানীয়রা ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে আগত লোকজনের পদচারণায় মুখর হয় এ অঞ্চল। মাসব্যাপী এ মিলনমেলায় আগমন ঘটে প্রায় দশ লাখ দর্শনার্থীর।