৪১
শতকরা ৯০ শতাংশ অনলাইন পর্নোগ্রাফিতে মৌখিক ও শারীরিকভাবে নারীর প্রতি সহিংসতা রয়েছে। ফরাসি পর্যবেক্ষক সংস্থা হাই কাউন্সিল ফর ইকুয়ালিটি বিটউইন উইমেন অ্যান্ড মেনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। -দ্য গার্ডিয়ান ১৮ মাসেরও বেশি সময় ধরে লক্ষাধিক ভিডিও নিয়ে গবেষণা ও বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে প্রকাশিত হয়েছে এ প্রতিবেদন। সেখানে দেখানো হয়েছে এসব ভিডিওর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফরাসি আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে। পাশাপাশি নারীদের অবমাননাকরভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। নারী ও পুরুষের মধ্যে সমতার জন্য হাই কাউন্সিল গত বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) পর্নোগ্রাফি নির্মাতাদের বিরুদ্ধে মামলার আইন পরিবর্তনের দাবি করেছে। একইসঙ্গে যারা পর্নোগ্রাফিকভাবে চিত্রায়িত হয়েছেন তাদের সুরক্ষার জন্য কনটেন্ট সরিয়ে নিতে সরকারের কাছে আহ্বান জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিডিওতে যৌনতাবাদী ও বর্ণবাদী প্রথাগত উপস্থাপনের মাধ্যমে নারীদের অপমানিত করা হচ্ছে। যা মানবিক মর্যাদা ও ফরাসি আইন উভয়ের পরিপন্থী। ফরাসি রাষ্ট্রীয় আইন কর্মকর্তার কার্যালয় প্রতিবেদনটির সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছে। পর্নোগ্রাফি শিল্প মত প্রকাশের স্বাধীনতা- বছরের পর বছর ধরে চলা এমন লবিং মোকাবেলায় রাষ্ট্রের নিষ্ক্রিয়তার নিন্দা করা হয়েছে প্রতিবেদনে। শিশু সুরক্ষা আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হিসেবে উঠেছে এসেছে এ পর্যবেক্ষণে। মাসিক পরিসংখ্যান অনুসারে, ফ্রান্সের ১২ বছর বয়সী ছেলেদের ৫১ শতাংশ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। প্রতিবেদনে বলা হয়, পর্নোগ্রাফিতে আসক্তি ধর্ষণ সংস্কৃতিকেই আরো শক্তিশালী করছে। ফরাসি সমতা পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রধান সিলভি পিয়েরে-ব্রোসোলেট পর্নোগ্রাফিকে ‘যৌন সহিংসতার স্কুল’ হিসেবে বর্ণনা করে বন্ধ করার ওপর জোর দেন। পর্নোগ্রাফিতে যৌন সহিংসতা ও নারীদের বিরুদ্ধে নির্যাতনকে আরো কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার জন্য অবৈধ অনলাইন কনটেন্ট মোকাবেলার লক্ষ্যে ফরাসি রাষ্ট্রীয় প্ল্যাটফর্ম ফারোসের সম্প্রসারণের আহ্বান জানানো হয়। ফ্রান্সে পর্নোগ্রাফি নির্মাতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও বিচার চলমান রয়েছে। তবে আইনি প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় প্রতিবেদনে। যার ফলে অনেক ভুক্তভোগী ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হতে পারে। পর্নোগ্রাফি শিল্পে সহিংসতা মোকাবেলা ও নারীদের সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন দেশটির সমতা ও বৈষম্য মোকাবেলা বিষয়ক মন্ত্রী বেরাঙ্গের কুইলার্ড। তিনি জানান, অপ্রাপ্তবয়স্কদের এসব কনটেন্টে প্রবেশ সীমাবদ্ধ করতে সরকার আরো কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার কথা বিবেচনা করছে। সমাজে সহিংস পর্নোগ্রাফির ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে আইনি সংস্কার পাশপাশি সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।