বিশ্বখ্যাত অর্থনীতি বিষয়ক ম্যাগাজিন ফোর্বসের ‘ফোর্বস ৪০০: যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ধনী’দের মধ্যে নেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তিন বছরের মধ্যে এই তালিকায় দ্বিতীয়বারের মতো নেই ট্রাম্প। বুধবার ফোর্বস ম্যাগাজিন এ ঘোষণা দিয়েছে। এমন এক সময়ে এই ঘোষণা দিল তারা, যখন ব্যবসায় প্রতারণার দায়ে নিউ ইয়র্কে মামলা মোকাবিলা করছেন ট্রাম্প। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গার্ডিয়ান।
ফোর্বস বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ‘এক্সক্লুসিভ ক্লাবে’ থাকার মতো ধনী নন ডনাল্ড ট্রাম্প। তারা আরও বলেছে, ডনাল্ড ট্রাম্পের আনুমানিক সম্পদের পরিমাণ ২৬০ কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের ধনী মানুষের মধ্যে ফোর্বস ৪০০ তালিকায় আসার ক্ষেত্রে তার ৩০০ মিলিয়ন বা ৩০ কোটি ডলার কম আছে। কয়েক দশক ধরে এই তালিকায় থাকার ক্ষেত্রে আবিষ্ট হয়ে ছিলেন ট্রাম্প। তালিকায় উপর থেকে আরো উপরে স্থান পাওয়ার জন্য তিনি সাংবাদিকদের অব্যাহতভাবে মিথ্যা কথা বলেছেন। ফোর্বস ম্যাগাজিন আরও বলেছে, ট্রাম্পের নিট সম্পদ কমেছে ৬০ কোটি ডলার।
এর বেশির ভাগের জন্য দায়ী তার সামাজিক যোগাযোগ বিষয়ক প্লাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালের সমস্যা ও মূল্য পড়ে যাওয়া। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর ৬ই জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে আক্রমণের কারণে তাকে নিষিদ্ধ করে টুইটার ও ফেসবুক। এরপর নিজেই ট্রুথ সোশ্যাল চালু করেন ট্রাম্প।
২০১৫ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন ট্রাম্প। তার আগে তিনি রিয়েল এস্টেট পোর্টফোলিও তৈরি করেন। এতে তার নাম ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফোর্বস ম্যাগাজিন লিখেছে, ট্রাম্পের পোর্টফোলিওতে একটি উজ্জ্বল জায়গা আছে। কম সংখ্যক মানুষ অফিসে সময় দেন, তার চেয়ে বেশি মানুষ গলফকোর্সে ব্যস্ত থাকেন। ফোর্বস আরও বলছে, হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের সময় ট্রাম্পের গলফ কোর্সের ব্যবসায় পতন হয়। কিন্তু তারপর সেই ব্যবসা আবার বেড়েছে। নিউ ইয়র্কে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতারণার যে দেওয়ানী মামলা চলছে তাতে গলফ কোর্সের মূল্যও ধর্তব্যের মধ্যে রয়েছে। এই মামলার বিচারক এরই মধ্যে রায় দিয়েছেন যে, ব্যবসায়ীরা যে প্রতারণার আশ্রয় নেন, তিনি স্পষ্টভাবে তাই করেছেন। ট্রাম্প এবং তার প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেরা সহ মামলার যেসব বিবাদী আছেন, তাদের কাছ থেকে ২৫ কোটি ডলার এবং পেশাগত জরিমানা দাবি করছেন নিউ ইয়র্কের এটর্নি জেনারেল লেতিতিয়া জেমস।
ডনাল্ড ট্রাম্পের বয়স এখন ৭৭ বছর। তিনি প্রথম ১৯৯০ সালে ফোর্বসের ধনীর তালিকা থেকে ছিটকে পড়েন। তখন তার রিয়েল এস্টেট ব্যবসা টিকে থাকার ক্ষেত্রে সংগ্রাম করছিল। ২০২১ সালেও তিনি এই তালিকার বাইরে চলে যান। এটা হয় তার প্রেসিডেন্সির সময়ে বিশৃংখল পরিস্থিতি এবং করোনা মহামারির পর। এরপর ২০২২ সালে তিনি এই তালিকায় আবার ফেরেন। তখন ফোর্বস ম্যাগাজিন বলেছিল, কোনো ভুল করবেন না। ট্রাম্প ভীষণ ধনী।
এরপর এক বছর ধরে মারাত্মক আইনি সমস্যায় পড়েছেন ট্রাম্প। একটি ধর্ষণ মামলা থেকে শুরু করে দেওয়ানি মামলা পর্যন্ত মোকাবিলা করছেন তিনি। এসব মামলাকে একজন বিচারক যথেষ্ট সত্য বলে মনে করছেন। তাকে অবশ্যই রাজ্য ও ফেডারেল পর্যায়ে নির্বাচনে বিপর্যয়, গোপনীয় তথ্য ধরে রাখা এবং পর্নো তারকার মুখ বন্ধ রাখতে তাকে অর্থ দেয়াসহ ৯১টি ফৌজদারি অভিযোগের জবাব দিতে হবে। তা সত্ত্বেও আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে তিনি জনমত জরিপে অনেক এগিয়ে আছেন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে হোয়াইট হাউসের প্রতিযোগিতায় তিনিই ২০২৪ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের ফেভারিট এখন পর্যন্ত।
ফোর্বস ৪০০: যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ধনীদের মধ্যে নেই ট্রাম্প
৯৩
previous post