আশিক ইসলাম
ইংরেজীতে একটি কথা আছে, “Fear is a sickness”, অর্থাৎ ভয় একটি অসুখ। একবার আওয়ামী সমর্থিত শিক্ষিত এক সাংবাদিক, আওয়ামীলীগ এবং তারেক রহমান নিয়ে নানা আলোচনা যুক্তি তর্কের পর আমাকে বলেছিলেন, “They are permanently infected with deep fear, they will carry it until they die”, তারা স্থায়ীভাবে গভীর ভয়ে আক্রান্ত, আমৃত্যু তারা এটা বহন করবে।’
আমি জানি, যদি সেই সাংবাদিকের নাম বলি তিনি এখন অস্বীকার করবেন। কারন তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কিছু বলা মানে আওয়ামী নীতি অনুস্বরন করা। তারেক রহমানের কোনো ভালো কথা বা কাজ স্বীকার করা মানে আওয়ামী বিরোধী।
যদি প্রশ্ন করা হয়, তারেক রহমানকে সবচেয়ে বেশী ভয় পায় কে ? মুহুর্তেই উত্তর আসবে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা। আর যেহেতু ভয় একটি সংক্রমিত অসুখ, তাই ‘তারেকভীতি’ গভীরভাবে সংক্রমিত হয়েছে, আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে আওয়ামী বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বিচারক এমনকি কর্মী সমর্থকের মধ্যেও। কিন্তু কেন তাদের এত ভয়? কেন তারা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করতে এত ব্যাস্ত ?
আসুন একটু প্রথম থেকে শুরু করি-
১। ১৯৮১ সালের প্রথম দিক। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর আমন্ত্রনে ভারত সফরে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। সেই সফরে দিল্লি¬তে ইন্দিরা গান্ধীর সরকারি বাসভবনে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে শেখ হাসিনা তথা শেখ মুজিবের জীবিত দুই কন্যাকে বাংলাদেশে ফিরে যেতে সাহায্য করার জন্য ইন্দিরা গান্ধী প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে অনুরোধ করেন। জিয়াউর রহমান বলেন, ‘তাদের দেশে ফিরে যেতে কোন অসুবিধা নেই। তাদের সকল সম্পতি যা সরকারের হেফাজতে রয়েছে তা ফেরত দেয়া হবে এবং সরকার তাদের নিরাপত্তা দিবে।’ কলকাতা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক সানডে পত্রিকায় ছবিসহ সম্পুর্ণ প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল।
জিয়াউর রহমান সরকারের সহযোগিতায় ১৭ মে ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে আসেন। শেখ হাসিনা দেশে ফেরার ২ সপ্তাহের মধ্যে জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে নিহত হন। কথিত আছে, জিয়াউর রহমান নিহত হবার দিন শেখ হাসিনা বিদেশে পালাবার চেষ্টা করেছিলেন।
বাংলাদেশের জনগণের কাছে শেখ হাসিনার দেশে আসা এবং জিয়াউর রহমানের নিহত হবার ঘটনা প্রশ্নবিদ্ধ হলেও জিয়া পরিবারের পক্ষ থেকে তখনই শেখ হাসিনার প্রতি হত্যার অভিযোগ বা কোন অঙ্গুলি প্রদর্শন করা হয়নি। বরং শেখ হাসিনা তার কার্যকলাপে প্রমান করেছেন, তিনি কতটুকু জিয়া এবং জিয়া পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতে চান। আজ অবধি শেখ হাসিনা জিয়া এবং জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে লাগাতার মিথ্যাচার করছেন। অশোভন উক্তি করছেন। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় বসেই সবার আগে জিয়াউর রহমানের মাজারে যাবার ঝুলন্ত সেতু সরিয়ে দিয়েছিলেন। এ পর্যন্ত লক্ষ কোটিবার জিয়াউর রহমান এবং তার পরিবারকে নিয়ে আপমানজনক-অবাস্তব, অযৌক্তিক- অসত্য কথা বলেছেন শেখ হাসিনা। সড়ক থেকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে দিয়েছেন, বিমান বন্দর থেকে জিয়াউর রহমানের নাম সরিয়ে দিয়েছেন, জিয়ার মাজারে জিয়ার লাশ নেই বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করেছেন, জিয়ার মাজার সরিয়ে ফেলার হুমকি দিয়েছেন, ইতিহাস থেকে জিয়ার নাম ও কীর্তি মুছে ফেলার সকল চেষ্টা করেছেন। এত কিছু করেও পারেননি বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের হৃদয় থেকে জিয়াউর রহমান এবং জিয়া পরিবারের ভালোবাসা মুছে ফেলতে। বরং মৃত জিয়াকে অপমান করে, জিয়া পরিবাকে অপমান করে, অপদস্থ করে, ঘর ছাড়া করে, জেলে ভরে, জিয়া অনুসারী নেতা কর্মী সাধারন নিরিহ মানুষকে মামলা হামলা খুন করে বাংলাদেশের মানুষের মনকষ্ট দিয়ে ঘৃণার পাত্রীতে পরিনত হয়েছেন জনবিচ্ছিন্ন কথিত জননেত্রী শেখ হাসিনা।
কিন্তু কেন শেখ হাসিনার এত আক্রোশ জিয়া এবং জিয়া পরিবারের প্রতি?
্ইই
সাক্ষী, নিঃসন্দেহে শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতাপুর্ব বাংলাদেশের অন্যতম একজন জনপ্রিয় নেতা। ইতিহাস এও সাক্ষী দেয় যে, ইতিহাস আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়কাল থেকে শেখ মুজিবুর রহমান যেখানেই ব্যার্থ হয়েছেন, সেখানেই সফল হয়েছেন জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পরিচালনা, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামের সাধারন মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গন, রাজনীতি অর্থনীতি সব ক্ষেত্রে। যা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারেন না শেখ হাসিনা। হীনমন্যতায় ভোগেন। প্রতি নিয়ত নিজেকে, নিজের দলকে ক্ষুদ্র ভাবেন। নিরপেক্ষ বিচারে শেখ হাসিনার চোখে পিতা শেখ মুজিবের চেয়ে অনেক বেশি কীর্তিমান মহানায়ক হিসাবে দেখা দেয় জিয়া। জনপ্রিয়তা শ্রদ্ধা ভালোবাসায় বেগম খালেদা জিয়া তার থেকে সহ¯্র মাইল এগিয়ে। মা হিসাবে শেখ হাসিনাই সবচেয়ে বেশি ভালো জানেন তার নিজ সন্তানদের চরিত্র, বদঅভ্যাস, সামাজিক অবস্থা এবং বাংলাদেশের মানুষের কাছে তাদের গ্রহনযোগ্যতা। আর তাই প্রতিনিয়ত শেখ হাসিনা, জিয়া এবং জিয়া পরিবারকে ছোট করে নিজে, নিজ পিতা ও পরিবারকে বড় করতে চান। রক্তচক্ষু দেখিয়ে, আইন করে, জেল জুলুম হত্যার মধ্যদিয়ে দেশবাসির ভালোবাসা আদায় করতে চান।
২। শেখ হাসিনা ও তার কূচক্রি প্রভুরা ধারনা করেছিলো, জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী ধারার মৃত্যু ঘটবে। যদি কিছু অবশিষ্ট থাকে তবে তা, নকল জাতীয়তাবাদী এরশাদকে দিয়ে বিনষ্ট করা হবে। এরশাদকে স্বৈরাচার বলা হয়। অথচ এই স্বৈরাচারকে ৯ বছর ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন শেখ হাসিনা। এরশাদের সাথে লংড্রাইভে গিয়েছেন। দফায় দফায় এরশাদের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছেন। নিজ দল আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীর সাথে বেঈমানী করেছেন। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে পেছন থেকে ছুরি মেরেছেন। অর্থের বিনিময়ে নিজ দল এবং জোট ঘোষিত আন্দোলনে অনুপস্থিত থেকেছেন। বার বার চেষ্টা করেছেন তৎকালীন বিএনপি’র সিনিয়র নেতা এবং গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে সদ্য আসা বেগম খালেদা জিয়াকে বিপাকে ফেলতে।
কিন্তু দিন শেষে দেখা যায়, এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ইতিহাসের পাতায় বেগম খালেদা জিয়া জায়গা করে নেন আপোষহীন নেত্রী হিসাবে। অন্যদিকে শেখ হাসিনার ললাটে জুটে স্বঘোষিত ‘জাতীয় বেইমান’ খেতাব। বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্বের আড়ালে ম্লান হয়ে যায় শেখ হাসিনার নেতৃত্ব।
৩। এরশাদের পতনের পর, বাংলাদেশে ত্বত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে প্রথমবারের মত জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের পুর্বে শেখ হাসিনা মন্তব্য করেছিলেন, ‘বিএনপি ১০টির বেশী আসন পাবে না।’ তবে এ কথা ঠিক, ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে বিএনপিকে অনেক বেগ পেতে হয়েছিলো। আওয়ামী প্রচারণার সামনে বিএনপির প্রচারণা ছিলো খুবই দুর্বল। নির্বাচনের আগেই শেখ হাসিনা এবং তার দল প্রচার করতে থাকে তারাই ক্ষমতায় আসছে। এমনকি সম্ভাব্য আওয়ামী মন্ত্রীসভার তালিকা প্রকাশ পায় সংবাদপত্রে।
নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে বিএনপি সরকার গঠন করে। বেগম খালেদা জিয়া ৫টি আসনে প্রার্থী হয়ে ৫টিতেই বিজয় লাভ করেন। তরুণ তারেক রহমান মায়ের নির্বাচনী আসনগুলির সমন্বয়কের ভুমিকা পালন করেন। ৩০০ আসনের মধ্যে বিএনপি ১৪০টি এবং আওয়ামীলীগ ৮৮টি আসনে জয় লাভ করে। শেখ হাসিনা ৫ টিতে প্রার্থী হয়ে ৩ টি আসনে পরাজিত হন।
ঊন্মাদ হয়ে পড়েন শেখ হাসিনা। বেগম খালেদা জিয়া যেদিন প্রধানমন্ত্রীর শপথ নেন, শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন, ‘বিএনপিকে এক দিনের জন্যও শান্তিতে থাকতে দিবো না।’ শেখ হাসিনা তার কথা রেখেছেন- দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করার জন্য ১৮৬ দিন হরতাল করেছেন। লাগাতার সংসদ বর্জন করেছেন। জনতার মঞ্চ করে প্রশাসনের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে দিয়েছেন। বিদেশে দেশের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করেছেন। সংসদে, সংসদের বাইরে প্রতি মুহুর্তে বেগম খালেদা জিয়ার নামে মিথ্যাচার করেছেন। কটূক্তি করেছেন, অশালীন ভাষায় গালাগাল করেছেন, পরোক্ষভাবে হত্যার হুমকী দিয়েছেন। এমন কোন ইতর ভাষা নেই যা তিনি ব্যাবহার করেননি। এমনকি প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্যও বেগম খালেদা জিয়াকে দায়ী করেছেন।
নিজের এবং পারিবারিক শিক্ষার কারনে, বেগম খালেদা জিয়া ১ বারের জন্যও শেখ মুজিব বা শেখ হাসিনাকে নিয়ে কোন বাজে মন্তব্য বা কথা বলেননি।
৪। ৯৬’তে জামায়াতের সাথে আতাত করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছিলো ১৪৬টি আসন। বিএনপি পায় ১১৬টি আসন। ক্ষমতায় এসেই কমিশন বানিজ্য শুরু করেন শেখ হাসিনা। ক্রয় করেন অকেজো মিগ ২৯, ফ্রিগেড ইত্যাতি। দেশকে পৈত্রিক তালুকে পরিনত করেন। নিয়মিত চাঁদা নিতে থাকেন দেশের সকল পর্যায়ের ছোট-বড় ব্যাবসায়িদের কাছ থেকে। নগদে এবং চেকের মাধ্যমে তিনি যে নিয়মিত ঘুষ নিতেন তা প্রকাশ করে দিয়েছেন নূর আলি, আব্দুল জলিল, শেখ সেলিম, আব্দুল আওয়াল মিন্টু এবং ওবায়দুল কাদের।
১ টাকার বিনিময়ে গণভবন নিজের নামে লিখে নিয়েছিলেন মাত্র এক টাকায়। অথচ গণভবণ একটি ঐতিহাসিক স্থান। ছোট বোন রেহেনাকে দিলেন সরকারি অন্য একটি ভবন। গণভবন নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার বিরোধিতা, জনগণের কটূক্তি আর সংবাদপত্রের উপহাসে পরিনত হলেন শেখ হাসিনা। রাগে ক্ষোভে গণভবন ছেড়ে দিতে বাধ্য হলেন। পত্রিকা অফিসে তার পেটোয়া বাহিনী দিয়ে হামলা করালেন। শপথ নিলেন বেগম খালেদা জিয়াকেও একদিন ঘরছাড়া করবেন। নিজেকে সবার চেয়ে জ্ঞ্যানী বানাতে শেখ হাসিনা বিভিন্ন দেশ থেকে ডজনখানেক ডক্টরেট ডিগ্রি ক্রয় করলেন। দেশের জ্ঞানী গুনীদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে কথা বলতে থাকেন। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকদের নাম ধরে গালাগালি করলেন। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাসিমকে দিয়ে আদালতের বিরুদ্ধে লাঠি মিছিল করালেন। সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গনে বস্তি বসিয়ে দিলেন। ডঃ কামালের বাসার সামনে কয়েক ট্রাক সিটি কর্পোরেশনের মায়লা ফেলার নির্দেশ দিলেন। দুর্গন্ধে এলাকাবাসী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে ছিলো। শুধুমাত্র একটি এলাকা বা পরিবেশ নয়, শেখ হাসিনা তার দুর্গন্ধযুক্ত মুখের ভাষায় দেশের রাজনীতিকেও কুলষিত করে তোলেন। বস্তির নি¤œ শ্রেনীর অশিক্ষিত মহামুর্খের মত সংসদে দাঁড়িয়ে বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে জঘন্য মিথ্যাচার করেছেন, বেগম জিয়ার অসুস্থতাকে নিয়ে পরিহাস করেছেন, ব্যাঙ্গ করেছেন।
কিন্তু বেগম জিয়ার ভাবমুর্তিতে বিন্দুমাত্র আঁচড় কাটতে পারেননি শেখ হাসিনা। দেশবাসীর কাছে শেখ হাসিনা বাচাল এবং ফালতুতে পরিনত হয়েছেন। আদালত শেখ হাসিনাকে ‘রং-হেডেড’ আখ্যায়িত করেছে। অন্যদিকে বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের মানুষ ‘দেশনেত্রী’ উপাধি দিয়েছেন।
৫। ২০০১ অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিক্রমার মধ্যদিয়ে জাতীয় রাজনীতির অন্যতম আলোচিত ব্যক্তিতে পরিনত হন তারেক রহমান। আওয়ামীলীগের সাজানো প্রশাসন এবং কালো টাকার বিপরীতে বেগম খালেদা জিয়ার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে তারেক রহমানের দূরদৃষ্টি, বিচক্ষনতা, বৈজ্ঞানিক পরিকল্পনা এবং কঠোর পরিশ্রমে বিএনপি ১৯৩ টি আসনে জয়লাভ করে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে ৬২ টি আসনে ।
শেখ হাসিনা আর তার প্রভু গোষ্ঠী এই পরাজয় কোনভাবেই মেনে নিতে পারেনি। শুরু হয় তাদের নুতন পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, নুতন মিশন। ‘টার্গেট তারেক’ মিশন। চার ধাপে এই মিশন বাস্তবায়ন করা হয়। প্রথমে পরিকল্পিত ভাবে প্ল¬ট তৈরী করে রাজধানী ঢাকা সহ অন্যান্য বিভাগীয় শহরের বাতাসে মিথ্যা ছড়িয়ে দেয়া হয়। দ্বিতীয় ধাপে শেখ হাসিনা ও আওয়ামীলীগ নেতারা সেই মিথ্যাচার নিয়ে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে জনসমাবেশে বক্তব্য বিবৃতি দিতে থাকে। তৃতীয় ধাপে আওয়ামীলীগ নেতাদের বক্তব্য পুজি করে আওয়ামী বুদ্ধিজীবী এবং মিডিয়া সেই মিথ্যাচার নিয়ে ব্যাপক লেখালেখি শুরু করে। চতুর্থ এবং ফাইনাল ধাপে প্রচারিত সকল মিথ্যাচার একসাথে ইংরেজী অনুবাদ করে, সিডি ভিডিও এবং বুকলেট বানিয়ে বিদেশীদের কাছে তারেক রহমান, বিএনপি সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লাগাতার ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়াতে থাকে আওয়ামীলীগ। এ কথা অস্বীকার করা যাবে না যে, সে সময় বিএনপির ২/১ জন নেতা নিজ স্বার্থে অথবা বুঝে কিংবা না বুঝেও আওয়ামী ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পাঁ দিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা ধারাবাহিকভাবে তারেক রহমানকে আক্রমন করেছেন, মিথ্যাচার করেছেন, অবাস্তব কথা বলেছেন। তারেক রহমান বারবার বলেছেন, ‘আমি আপনার সন্তানতুল্য, আপনার ভাষায় আপনার কোন কথার প্রতিবাদ করা আমার সাজে না। যদি আমার বিরুদ্ধে প্রমানসহ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে তবে তা প্রকাশ করুন, মিডিয়ার সামনে আনুন, আমি জবাব দিবো।’ কিন্তু ঐ যে, চোরে শোনে না ধর্মের কথা। শেখ হাসিনাও শেনেননি এবং থামেননি। অবশেষে বাধ্য হয়ে তারেক রহমান নিজেই আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। আওয়ামী মিথ্যাচার প্রমানে শেখ হাসিনা এবং আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। বিএনপির বেশ কিছু তরুণ ব্যারিস্টার ও আইনজীবী তারেক রহমানের পক্ষে সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন। ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, নাসিরুদ্দিন আহমেদ অসীম, কায়সার কামাল, প্রয়াত সানাউল্ল¬াহ মিয়া, মাসুদ তালুকদার প্রমুখের সাথে সেখানে আমিও ছিলাম। আমার স্পষ্ট মনে আছে, আইনের বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে হাসিনা এবং জলিলের উত্তর না আসায়, পরবর্তি পদক্ষেপের সময় তৎকালীন বিএনপি মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া আমাদেরকে বলেছিলেন, রাজনৈতিক বক্তব্য আদালত অঙ্গনে না নেয়াই ভালো।
ঘৃণাকে ভালোবাসার মাধ্যমে জয় করার চেষ্টা করেছিলেন তারেক রহমান। ২০০৪ সালে হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় দেশে আসেন এবং আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয় তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হবেন। জয়ের রাজনীতিতে আসার এই সংবাদকে স্বাগত জানিয়ে তারেক রহমান ফুল, মিষ্টি এবং একটি শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছিলেন। এমপি জহির উদ্দিন স্বপনের নেতৃত্বে আমি এবং রকিবুল ইসলাম বকুল গিয়েছিলাম সুধা সদনে। আমাদেরকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। বাড়ির গেইটে শুধুমাত্র চিঠি রেখে ফুল ও মিষ্টি ফেরত দেয়া হয়েছিলো। আমাদের সাথে এতই জঘন্য আচরন এবং হেনস্থা করা হয়েছিলো যে, পুলিশ কল করে পুলিশের সহায়তায় আমাদেরকে ফেরত আসতে হয়েছিলো।
২০০৪ সালের ২৭ জানুয়ারী বিএনপির ফরিদপুর ইউনিয়ন প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান শেষে তারেক রহমান টুঙ্গি পাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত করেন। সেখানেও ঘটে এক নেক্কারজনক ঘটনা। তারেক রহমান ও তার সফর সঙ্গীদের উপস্থিতিতে প্রথমে মাজার প্রাঙ্গনের লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়। মাজার জিয়ারত করতে চাইলে বলা হয়, মাজার তালা দেয়া এবং খাদেম নাই। তারেক রহমান বলেন, তিনি অপেক্ষা করবেন, খাদেমের খোঁজ করুন। সে সময় তারেক রহমানের সাথে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন প্রতিনিধি সভা কভার করতে ঢাকা থেকে আসা ২৩ জন সাংবাদিক। অন্ধকারে টিভি সাংবাদিকদের ক্যামেরার আলোয় মানুষ জড়ো হতে থাকে। প্রায় বিশ মিনিট অপেক্ষার পর খাদেম মাজারের তালা খুলে দেন।
আমি যে গাড়িতে ছিলাম সেখানে ছিলেন, সাংবাদিক আনোয়ার আলদীন, ফরিদ আলম, বাসির জামাল, লন্ডন প্রবাসী জনকন্ঠের সাংবাদিক লিটন ভাই ও সাংবাদিক সালেহ শিবলী, বর্তমান কৃষকলীগ নেতা সেই সময়কার প্রথশ আলোর সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলন প্রমুখ। ফেরার পথে মাইক্রোবাসে আলোচনার বিষয় ছিল- বাংলাদেশে সহনশীল রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলতে জিয়া পরিবার এবং বিএনপি যে পরিমান চেষ্টা করছে তার এক ভাগও যদি শেখ হাসিনা ও তার দল এগিয়ে আসতো তাহলে আজ দেশ ও জনগণের ভাগ্যের অবস্থা আরো উন্নত হতো। কেউ একজন স্বরন করেন, ১৯৯১ সালে বেগম জিয়া যখন প্রধানমন্ত্রী সে সময় হাসিনা পুত্র জয়, ঢাকা শহরে মাতাল অবস্থায় গাড়ী এক্সিডেন্ট করে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলো। বেগম জিয়ার নির্দেশে কোন মামলা হয়নি, ওয়ার্নিং দিয়ে পুলিশ জয়কে বাসায় পৌঁছে দিয়েছিল। শুধুমাত্র মুজিব পরিবারের সম্মান এবং একটা বাচ্চা ছেলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মহানুভবতা দেখিয়ে ছিলেন বেগম জিয়া।
দিন যত গড়িয়েছে, শেখ হাসিনার মধ্য থেকে মানবীয় গুনের পরিবর্তে দানবীয় গুণ বেড়েছে। উন্মাদ হয়েছেন, ক্রুদ্ধ হয়েছেন। জিয়া এবং জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন, লাগামহীন বিশোদগার করেছেন। অন্যদিকে, আপন মনে তারেক রহমান নিজের কাজ করে গেছেন। দেশব্যাপী সাধারণ মানুষকে উজ্জীবিত করে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেছেন। প্রত্যন্ত গ্রামের অসহায় দুঃখি মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। গরিবের সন্তানেরা যেন শিক্ষা লাভ করে তার ব্যাবস্থা করেছেন। আর্ত-পীড়িতের সেবা করেছেন। কৃষক শ্রমিক, ছাত্র যুবক থেকে শুরু করে গৃহিণী এবং গ্রামের সাধারণ মহিলাদের সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক সাহায্যের মাধ্যমে ভাগ্য পরিবর্তনের পথ দেখিয়েছেন।
জিয়া এবং বেগম খালেদা জিয়ার সফলতার পর তারেক রহমানের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা শেখ হাসিনার বুকে আরো জ্বালা ধরিয়েছে। তার প্রভুদের মাথা খারাপ করে দিয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার কায়েমী শক্তি ‘তারেক ঠেকাও’ আন্দোলন আরো বেগবান করেছে। এজেন্ডা বাস্তবায়নে অকল্পনীয় অর্থ ব্যয় করেছে। লগি-বৈঠার তান্ডব ঘটিয়েছে, প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে ১/১১ জন্ম দিয়েছে। দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের মুল টার্গেট ছিলো জিয়া পরিবার ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ।
দেশী-বিদেশী চক্রান্ত এমন পর্যায়ে ছিলো যে, তারেক রহমান গ্রেফতার হওয়ার আগের দিন একজন রাষ্ট্রদূত ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন, কেন তারেক রহমানকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। ৭ মার্চ ২০০৭ অন্যায়ভাবে কোন মামলা ছাড়াই তারেক রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। ১/১১ এর কুশীলবরা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ন্যাক্কারজনক মিথ্যাচার করে। সে সময় আওয়ামী বুদ্ধিজীবী আবুল বারাকাত বলেন, গত ৫ বছরে শুধুমাত্র বিদ্যুৎখাত থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। জাতির উদ্দেশ্যে জেনারেল মঈন একই কথা বলেছিলেন। অথচ ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ৫ বছরে বিদ্যুৎ খাতের কর্মকর্তা, কর্মচারির বেতন ও উন্নয়নের মোট বাজেট ছিলো ১৩ হাজার ৪ শত ৮৭ কোটি টাকা। ওরা চেয়েছিল তারেক রহমানকে হত্যা করতে। চীর জীবনের জন্য পঙ্গু করে দিতে। তারেক রহমানের চরিত্রে এমনভাবে কালিমা লেপন করতে যেন তিনি আর রাজনীতিতে ফিরে না আসেন। সে সময় আওয়ামী মুখপাত্র ইকবাল সোবহানসহ কয়েকজন আওয়ামী বুদ্ধিজীবী বলেছিলেন, তারেক রহমানকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য মুক্তি দিলে ১/১১ এর স্প্রিরিট নষ্ট হবে, ১/১১ এর উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে।
কি দোষ তারেক রহমানের? তিনি কি শেখ হাসিনার মত চেকে এবং নগদে কারো কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন? চাঁদাবাজি করেছেন? শেখ হাসিনা-রেহেনার মত কমিশন খেয়েছেন? মুজিব পুত্রের মত ব্যাংক ডাকাতি করেছেন? কারো ব্যাবসা বানিজ্য, বাড়ি-ঘর দখল করেছেন? শেখ হাসিনার ন্যায় মানুষ খুনের হুমকী দিয়েছেন? শেখ হাসিনার ন্যায় দেশের জ্ঞ্যানী গুনী মানুষকে অসম্মান করেছেন? অপমানিত করেছেন? এমন কোনো অভিযোগ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কেউ দেখাতে পারবে না। বরং যে ব্যাক্তি যত বড় বা ছোট হোক না কেন, যারাই তারেক রহমানকে এক বারের জন্যও কাছ থেকে দেখেছেন, তার সাথে কথা বলেছেন, তার সাহচার্য লাভ করেছেন তারা সকলেই তারেক রহমানের স্বলাজ অমায়িক ব্যাবহারে মুগ্ধ হয়েছেন। স্বীকার করেছেন তারেক রহমান ভদ্র বিনয়ী এবং বিচক্ষন। তারেক রহমান জিয়াউর রহমানের প্রতিচ্ছবি।
৬। বিশাল পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে কুকুর যদি ঘেঁও ঘেঁও করে এতে পাহাড়ের বিশালতা কমে না। তারেক রহমান সেই বিশাল পাহাড়। আর এ কারনেই শেখ হাসিনা এবং আওয়ামীলীগের নির্লজ্য মিথ্যাচার, অসভ্য ভাষার বিপরিতে এখন পর্যন্ত তিনি কোন অশালীন ভাষা ব্যাবহার করেননি। পারিবারিক ঐতিহ্যের গুনে তিনি অসম্মান করার শিক্ষা পাননি। তারেক রহমান বিশ্বাস করেন সত্যের চেয়ে বড় কোন সৌন্দর্য নেই। সত্যের আলোয় অসত্য অস্থায়ী হয়। সত্য যত বেশি প্রকাশ পায়, মিথ্যা পুজারিদের বিরুদ্ধে তত বেশি প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব। আর তাই যুক্তি সহকারে, প্রমান দিয়ে তিনি শুধুমাত্র আওয়ামী বুদ্ধিজীবীদের লেখার উদ্ধৃতি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের ভুমিকা, শেখ মুজিবের ভুমিকা প্রকাশ করেছেন। কোন কথা তিনি নিজ থেকে বলেননি। বইয়ের নাম, লেখক, পৃষ্ঠা নাম্বার উলে¬খ করে তিনি সত্য তুলে ধরেছেন দেশবাসীর সামনে। যুক্তি ও প্রমান দিয়ে আওয়ামী লীগ তারেক রহমানের কোন কথার জবাব দিতে পারেনি। শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের পক্ষে যেমন সম্ভব নয় প্রমান দিয়ে তারেক রহমানের বক্তব্য খন্ডন করা। তেমনি সম্ভব নয় এক সাথে তাদের লেখকদের প্রায় ৩৬ টি বই ব্যান্ড করে দেয়া। এই সকল বই থেকেই তারেক রহমান আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের চেহারা। খুলে দিয়েছেন তাদের মুখোশ।
১১ জুন ২০১৪ মালয়েশিয়ায় দেয়া এক বক্তব্যে তারেক রহমান বলেছিলেন, ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আসার দুই সপ্তাহর মধ্যে জিয়াউর রহমান খুন হন। সেদিন শেখ হাসিনা বোরখা পরে কুমিলল্লা দিয়ে দেশ ত্যাগের চেষ্টা করেছিলেন কেন? তারেক রহমান আরো কিছু প্রশ্ন রেখেছিলেন, কথিত বিডিআর বিদ্রোহের নামে দেশপ্রেমী ৫৭ জন সেনা অফিসার হত্যা ও শেখ হাসিনার ভূমিকা নিয়ে।
তারেক রহমানের এ সকল প্রশ্নের কোন যৌক্তিক জবাব নেই আওয়ামী লীগের হাতে। শেখ হাসিনা জানে, এমন প্রশ্ন যত উঠবে ততই তারা রাজনৈতিক সংকটে পড়বে, দেশের মানুষের ক্রোধের শিকার হবে। দল ও নিজেদের নিরাপত্তার খাতিরে তারেক রহমানের মুখ বন্ধ করে দেয়া শ্রেয় ভেবেছেন শেখ হাসিনা। ৭ জানুয়ারী ২০১৫ শেখ হাসিনার পোষ্য আদালতের মাধ্যমে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতার মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়ে গণমাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রাচারের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। গত ৮ বছর দেশের কোন পত্রিকায় তারেকে রহমানের কোন বক্তব্য প্রকাশিত হয়নি। কিন্তু তাতে কিচ্ছু আসে যায়না। শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে তারেক রহমানের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারেনি। সামাজিক মাধ্যমে মানুষ আরো বেশি আপন করে নিয়েছেন তাদের প্রিয় নেতাকে।
তারেক ভীতি এতটাই পেয়ে বসেছে যে, এখন আদালতের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ প্লাটফর্মে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছেন শেখ হাসিনা।
আমরা অতীতে দেখেছি, বিশ্বের অনেক দেশে নিখাদ দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী নেতাকে দেশের জন্য, জনগণের জন্য কঠিন কষ্ট স্বীকার করতে হয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় অনেক বেশি চড়া মুল্য দিতে হচ্ছে জিয়া পরিবারকে। তারেক রহমান তার পিতা হারিয়েছেন, ভাই হারিয়েছেন, ৭৭ বছর বয়সী ৩ বারের প্রধানমন্ত্রী আসুস্থ মা জেলে, নিজে বিদেশে নির্বাসিত এবং শেখ হাসিনার সর্বশেষ জিঘাংসার স্বীকার তারেক স্ত্রী, ডঃ জোবায়দা রহমান।
ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষা, স্বৈরাচার কখনো ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না। অমানিশা শেষে ভোরের সুন্দর আলোয় একদিন ইতিহাসের অতল গহŸরে স্বৈরাচার নিজেই হারিয়ে যায়। টিকে থাকে একমাত্র জাতীয়তাবাদী শক্তি।
(লেখকঃ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব)