মেহজাবিন সুইটি, থাইল্যান্ড : পৃথিবীর অনেক দেশ রয়েছে যেখানে এখনও প্রকাশ্যে বেচাকেনা হয় মেয়ে মানুষ। তবে সেটা একটু ভিন্নভাবে। বিয়ার বিক্রির নাশে চলে এসব কেনাবেচা। যেসব দেশে এখনও প্রকাশ্যে এসব কাজ হয় তার মধ্যে অন্যতম থাইল্যান্ড। যেখানে দেহ ব্যবসা উন্মুক্ত। সরকারের পক্ষ থেকে বরং এটাকে আরও উৎসাহিত করা হয়। বিশেষ করে থাইল্যান্ডের পাতায়া প্রকাশ্য মেয়ে বেচাকেনার জন্য কুখ্যাত। পাতায়াকে বলা হয়ে থাকে গেইট অব হেইল। অর্থাৎ নরকের দরজা। পাতায়া প্রবেশের আগে অনেক জায়গাতেই লেখা আছে ‘ইফ ইউ ওয়ান্ট টু সি দ্যা হেইল, গো টু পাতায়া।’ মানে তুমি যদি নরক দেখতে চাও তাহলে পাতায়া যাও।
পাতায়ার ওয়াকিং স্ট্রিট সারাবিশ্বের পর্যটকদের কাছে ভীষন প্রিয় একটি জায়গা। সেখানে আমোদ স্ফ‚র্তি আর দেহভোগ অনেকটা ওপেন। সে জন্য এটাকে সিন সিটি বা সেক্স সিটিও বলা হয়ে থাকে। পাতায়ার এই রেড লাইট ডিস্ট্রিক্ট এ রয়েছে বহু সংখ্যক লেডি বয়। রয়েছে অনেক বয় গার্ল। অতএব বুঝতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না বিশ্বের যে কোনো পর্যটকের রুচি অনুযায়ি রয়েছে চাহিদা পুরণের ব্যবস্থা। শুধুমাত্র পাতায়া নয়, খোদ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককও কুখ্যাতি পেয়েছে একই কারণে । ব্যাংককের রাস্তায় রাস্তায় সন্ধ্যার পর মেয়েরা সেজেগুজে দলবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকে খদ্দেরের আশায়। এটা একেবারেই ওপেন। রাজধানী ব্যাংককে রয়েছে শতশত বার আর লাইভ বিনোদনের জায়গা। এসব বিনোদন ক্লাবে লাইভ সেক্স শো হচ্ছে। আর তার চারদিকে পর্যটকরা বসে উপভোগ করছে। ব্যাংকক থেকে পাতায়া সিটির দূরত্ব ১৬০ কিলোমিটার।
করোনাকালে পাতায়ায় পর্যটক একেবারেই কমে গিয়েছিলো। কিন্তু এখন আবার আগের অবস্থায় ধীরে ধীরে ফিরতে শুরু করেছে। সায়মন মিলার এবং তার স্ত্রী ন্যান্সি প্রথমবারের মতো পাতায়া এসেছেন লন্ডন থেকে। কথা প্রসঙ্গে জানালেন, ২০২০ সালেই তাদের পাতায়া আসার কথা ছিলো কিন্তু বিশ্ব মহামারি করোনার কারণে সেটা আর সম্ভব হয়নি। তারা অন্য কোনো শহরে হয়তো যাবেন কিন্তু তার আগে পাতায়া সীবিচে এবং নাইট ক্লাবগুলো ঘুরে দেখতে চান। তার বন্ধুরা একাধিকবার পাতায়া এবং ব্যাংকক সিটি ভ্রমন করেছেন। তাদের কাছ থেকে গল্প শুনেই তারা পাতায়া দেখার সিদ্ধান্ত নেন। রাতের পাতায়ার প্রশংসা করে তারা বলেন, থাইল্যান্ডের খাবার তাদের খুব আকৃষ্ট করেছে। বিশেষ করে পাতায়ার সী বিচটি তারা খুব পছন্দ করেছেন বলেও জানান।
চ্যাং লি তার বন্ধুদের সাথে আগেও এবার এসেছিলেন পাতায়া। এবার তারা তিন বন্ধু মিং লি, হু ম্যাং আর চ্যাং লি এসেছেন চায়না থেকে। তিনদির ব্যাংকক ঘুরে এখন তারা পাতায়ায়। পাতায়ার ওয়াকিং স্ট্রিটের প্রশংসা করে তারা জানালেন, বিনোদনের জন্য এর চেয়ে ভালো সিটি আর হতে পারে না। সব কিছুর মূল্যও সাধ্যের মধ্যে বলে জানালেন তারা।
বিদেশী পর্যটকদের ট্যুর গাইড হিসেবে পাতায়ায় পরিচিত টায়ালসন । টায়ালসন জানালেন, প্রতিদিনই তিনি দু’তিনটি গ্রæপকে ভাগ করে করে সময় দিচ্ছেন। তাদের নিয়ে তিনি শপিং মল, বীচ বা ক্লাবে যাচ্ছেন। আয় রোজগারও ভালো হচ্ছে এখন। মাস দুয়েক পরে এই ব্যস্ততা আরও বাড়বে বলেও জানান, টায়ালসন। তার মতে ওই সময়টাতে বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা আরও বেশি করে আসবেন। এখনও করোনার ভীতি কেটে যায়নি বলেও জানান টায়ালসন।
পাতায়ার ওয়াকিং স্ট্রিট ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে বার এবং ক্লাবগুলো আবারও নিয়মিতভাবে খুলতে শুরু করেছে। কিক বক্সিং ও বক্সিং স্পেসগুলোও এখন লোকে লোকারন্য। আবারও জমে উঠতে শুরু করেছে বার, ক্লাব ও লাইভ শোগুলো।