বিনোদন ডেস্ক : সহজ সরল মেয়েটির খুব ইচ্ছা ছিলো হিন্দি সিনেমার নায়িকা হবেন। প্রেমিকের হাত ধরে গাঙ্গু চলে আসলে মুম্বাই। মেয়েটিকে এনে কামাথিপুরায় বিক্রি করে দেন সেই প্রেমিক যুবক। তবে এ মেয়েকে দমিয়ে রাখা কঠিন, এটা বুঝতে সেখানকার মানুষের বেশি সময় লাগেনি। একসময় গাঙ্গুর পরিচয় হয় মাফিয়া ডন করিম লালার সঙ্গে। করিমের বোন হিসেবেই উত্থান গাঙ্গুর। যৌনপল্লিকে বাঁচানোর লড়াই তাঁকে নিয়ে যায় ময়দানে। সেখানে তাঁর দেয়া বক্তব্য জনপ্রিয় হয়ে যায় রাতারাতি, হয়ে ওঠেন নারী নেত্রী।
এস হুসেন জাইদির লেখা ‘মাফিয়া কুইনস অব মুম্বাই’ বইটির দ্বিতীয় অধ্যায়ের পাতায় চোখ রাখা যাক। ‘দ্য ম্যাট্রিয়ার্ক অব কামাথিপুরা’, যেখানে রয়েছে কামাথিপুরার মাতৃতন্ত্রের গল্প। ভারতের স্বাধীনতার পরপর, পঞ্চাশ-ষাটের দশকের মুম্বাই শহরের যৌনপল্লি কামাথিপুরা। সেখানকার একটি মেয়ে কীভাবে সাধারণ যৌনকর্মী থেকে এলাকার শেষ কথা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, কীভাবে পেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর সাক্ষাৎ, এটি তারই গল্প। সেই গল্পই অধ্যায়ের প্রথম পাতা থেকে তুলে আনলেন সঞ্জয় লীলা বানসালি তাঁর ‘গাঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি’ সিনেমায়। ভারতীয় সিনেমা বিশ্লেষকেরা বলছেন, আড়াই ঘণ্টার এই সিনেমা কখনো বইয়ের পাতায় ঢুকল, কখনো সেখান থেকে বেরিয়ে বাড়তি কাহিনি তুলে ধরল সেলুলয়েডে। পুরো সময়টায় একজনের দিকেই তাক করা রইল ক্যামেরার লেন্স। তিনি হচ্ছেন উদীয়মান অভিনেত্রী আলিয়া ভাট।
চলচ্চিত্র সমালোচক তরুণ আদর্শ বলেন, ‘আলিয়ার অভিনয় মন জয় করার মতো। নিখুঁত শব্দচয়ন, অভিব্যক্তি এবং যেভাবে তিনি রাগ, আনন্দ ও অসহায়ত্বের আবেগকে তুলে ধরেছেন, তা সত্যিই মুগ্ধকর। নায়িকার পর্দায় উপস্থিতি অবাক করার মতো।’ বানসালি তাঁর ‘ দেবদাস’-এ গল্প বদলেছিলেন, তবে গল্পে সেই জাঁকজমকতা এমনভাবে মিশিয়েছিলেন, যা দর্শকের একঘেয়ে লাগেনি। ‘পদ্মাবত’ সিনেমায়ও তাই। কিন্তু গাঙ্গুবাইয়ের মতো বাস্তব চরিত্রকে নিয়ে সিনেমা করতে গিয়ে এই ভারসাম্যের ঘাটতি চোখে পড়েছে। সুর কেটেছে কোথাও কোথাও। সেই সুরকে যদি কোনো একজন ধরে রাখার চেষ্টা করে থাকেন, তিনি আলিয়া ভাট। মধ্যমণি তিনিই টেনে নিয়ে গেছেন পুরো সিনেমা। শরীরী ভাষায় হয়ে উঠেছেন যৌনকর্মী কিংবা নেত্রী। নিজের এই নতুন রূপে নাকি উত্তীর্ণ আলিয়া। শুক্রবার সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে ‘গাঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি’। বক্স অফিস ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, সিনেমাটি প্রথম দিনে ব্যবসা করেছে ১০ কোটি ৫০ লাখ রুপি। দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ শনিবার প্রথম দিনের তুলনায় সামান্য বেশি ব্যবসা করেছে। এ দিন ১৩ কোটি রুপির ব্যবসা করেছে সিনেমাটি। দ্ইু দিনে মোট ২৩ কোটি ৫০ লাখ রুপির ব্যবসা করেছে ‘গাঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি’। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন, সপ্তাহ শেষে চমকে দেওয়ার মতো আয় করবে সিনেমাটি।